spot_img

ফুকুশিমা ট্র্যাজেডি: বিনম্র শ্রদ্ধায় মৃতদের স্মরণ জাপানে

অবশ্যই পরুন

নীরবতা, প্রার্থনা ও পরমাণু প্রকল্প বিরোধী প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের স্মরণ করল জাপানের ফুকুশিমা শহরের বাসিন্দারা। আজ থেকে দশ বছর আগে, ২০১১ সালে সুনামি ও ব্যাপক ভূমিকম্পে জাপানের ফুকুশিমা শহরে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

বুধবার মৃত স্বজনদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুকুশিমায় উপস্থিত হয়েছিলেন আৎসুশি নিজুমা। একসময় শহরটিতে একটি রেস্তোঁরা চালাতেন তিনি। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে নিজুমা বলেন, ‘আমি এখানে আমার মাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। তাকে বলতে এসেছি—আমার বাচ্চারা যারা একসময় তাদের দাদীর চারপাশে ঘুরঘুর করত, তারা বড় হয়েছে এবং ভালো আছে। আমি তাকে আরও বলতে চাই, আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিন, প্রতিমূহুর্তে তাকে স্মরণ করি।’

২০১১ সালের ১০ মার্চ জাপানের উত্তরপূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ জাপানের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত ভূমিকম্প হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী দুর্যোগ ঘটেছিল হয়েছিল সেদিন। ওই ভূমিকম্পের প্রভাবে সমুদ্রে জলোচ্ছাস দেখা দেয়, বিশাল দানবাকৃতির ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে সমুদ্রের তীরবর্তী ফুকুশিমা শহরে।

 ওই শহরের দাইচি এলাকায় তিনটি পারমাণবিক চুল্লি ছিল। ভয়াবহ ভূমীকম্প ও জলোচ্ছাসে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল সেগুলো। ফলে ফুকোশিমার পুরো এলাকায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে বিপজ্জনক মাত্রায়।

এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পরপরই ফুকুশিমার অধিবাসীদের পার্শ্ববর্তী ইউয়াকিসহ অন্যান্য শহরে সরিয়ে নিয়েছিল জাপান সরকার। পাশাপাশি ফুকুশিমায় ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসতে বিভিন্ন পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছিল।

সম্প্রতি অন্যান্য শহর থেকে ফুকুশিমায় লোকজন ফিরে আসা শুরু করলেও শহরটির সাবেক অনেক বাসিন্দাই জানিয়েছেন, তাদের আর ফিরে আসার কোনও পরিকল্পনা নেই। শহরটিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতির কারণেই ফিরে আসতে চাইছেন না তারা।

ইদা হিতিকারি (৩৪) নামের এক নারী বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি এই শহরে জন্মেছি, বেড়ে উঠেছি। নিজের জন্য তেমন চিন্তা নেই, কিন্তু আমার সন্তানদের তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকির মধ্যে নিয়ে আসতে চাইনা আমি।’

দেশটির সরকারি সূত্র বলছে, ২০১১ সালের ওই দুর্যোগের পর থেকে ফুকুশিমার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ এখনও বাস্তুচ্যুত অবস্থায় আছেন।

ফুকুশিমায়া ওই দুর্যোগের পর যেসব মৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল, তাদের প্রায় প্রত্যেকের সমাধির ওপর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। আর যারা ভেসে গিয়েছিলেন সমুদ্রে, তাদের স্মরণে গড়া হয়েছে স্মৃতি সৌধ। বুধবার সেগুলো সাজানো হয়েছিল, ফুল, কাগজের তৈরি পাখি ও হলুদ রঙের রুমালে। মৃতদের স্মরণে সারা দেশ থেকে এগুলো পাঠিয়েছেন মানুষ।

 ৬২ বছর বয়স্ক হিরোকো ইশিকাওয়া রয়টার্সকে বলেন, ‘সেদিন ঠাণ্ডা আবহাওয়া ছিল…যখনই ঠাণ্ডা পড়ে, তখনই আমার ওই ভয়ঙ্কর দিনটির কথা মনে পড়ে যায়।’

‘তবে আজ একটি রৌদ্রোজ্জল দিন। আমি আমার পিঠে সূর্যের কিরণ অনুভব করছি আমার মনে হচ্ছে সে(সূর্য) আমায় বলছে— এভাবে একা বসে থেকো না, তোমার মতো যারা এই শহরকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে, তাদের সবার সঙ্গে কথা বলো।’

সূত্র: রয়টার্স

সর্বশেষ সংবাদ

পাপারাজ্জিদের দেখে মেজাজ হারালেন তাপসী পান্নু

বলিউড অভিনেত্রী তাপসী পান্নুকে অনেক সময়ই দ্বিতীয় জয়া বচ্চন বলা হয়ে থাকে। কারণ দু’জনেই পাপারাজ্জিদের দেখলেই মেজাজ হারিয়ে তাদের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ