যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে অশান্তি ও সংঘাতের উৎস। তাদের দেয়া ভিত্তিহীন অপবাদ চীন সহ্য করবে না এবং নিজেদের স্বার্থ লঙ্ঘিত হতে দেবে না। রোববার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওয়াং ই এক সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এর মাধ্যমে চীন বার্তা দিল যে, তারা প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি সংঘাতে যেতে প্রস্তুত যা থেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে।
ওয়াং ই যুক্তরাষ্ট্রকে এই সত্যটি স্বীকার করে নিতে আহ্বান জানান যে, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের নামে তারা বেশিরভাগ সময়ই ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে আসছে। তিনি বলেন, ‘তাদের এই আচরণ বিশ্বে অনেক ঝামেলা সৃষ্টি করেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে অশান্তি ও সংঘাতের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি স্বীকার করে নেবে ততই মঙ্গল। অন্যথায়, বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসবে না।’
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীন ভাল করছে কিনা তা তার নাগরিকরাই সবচেয়ে ভাল বলতে পারেন। চীনের কী করা উচিত, সে বিষয়ে এর জনগণই শুধুমাত্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত মাসে চীনা চন্দ্র নববর্ষের প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আর বাইডেনের মধ্যে ফোনের কথোপকথনের ফলাফলগুলো উভয় পক্ষের অনুসরণ করা উচিত এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক ও নতুন পথে অগ্রসর করা উচিত।’
আলাদা সামাজিক ব্যবস্থার সাথে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পৃথক দুটি দেশ হওয়ায় স্বভাবতই পার্থক্য ও মতবিরোধ রয়েছে উল্লেখ করে ওয়াং ই বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত এড়াতে দুই পক্ষের মধ্যে সুষ্ঠু যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে কৌশলগত ভুল-ভ্রান্তি রোধ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তাদের স্বার্থে জড়িত হওয়ায় প্রতিযোগিতা অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়, তবে উভয় পক্ষকেই ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সুস্থ প্রতিযোগিতায় থাকা উচিত।’
চীন আশা করে যে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে সুষ্ঠুভাবে প্রতিযোগিতা করবে এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ভিত্তিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের চাপিয়ে দেয়া সমস্ত অযৌক্তিক বিধিনিষেধ অপসারণ করবে। পাশাপাশি, তারা নতুন করে আর কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না বলে জানান ওয়াং ই। তিনি উল্লেখ করেন যে, চীন করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।