ভারতে নাগরিক অধিকার বিপন্ন। স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার অবরুদ্ধ। সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর চলছে অত্যাচার। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র আর ‘অবাধ’ নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে ভারতের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সম্পর্কে এমনটাই মূল্যায়ন করেছে মার্কিন সংস্থা ‘ফ্রিডম হাউস’।
মার্কিন সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত এই গবেষণা সংস্থা তাদের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেছে। তাদের মূল্যায়নে ‘অবাধ’ থেকে ‘আংশিক অবাধ’ গণতান্ত্রিক পরিবেশে অবনমন ঘটেছে ভারতের। ১৯৯৭ সালের পর থেকে প্রথমবার এই পদস্খলন। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে এই রিপোর্টে স্বাভাবিকভাবেই বিড়ম্বনা বাড়ল মোদি সরকারের।
ওয়াশিংটনের এই থিঙ্ক ট্যাঙ্কের বিশ্লেষণ, মোদি জমানায় মুসলিম নাগরিকদের উপর বৈষম্যের ধারা অব্যাহত। সরকারের সমালোচক ও সাংবাদিকদের উপর হেনস্তা বাড়ছে। ‘ফ্রিডম হাউস’-এর দাবি, হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার ও তাদের সহযোগীরা ক্রমবর্ধমান হিংসা ও বৈষম্যের রাজনীতিতে মদত দিচ্ছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই প্রবণতা অব্যাহত। উদাহরণ হিসেবে ২০২০ সালের অনেকগুলি অযাচিত ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা ও দুম করে চাপানো লকডাউনের ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের অবর্ণনীয় দশার সহ একঝাঁক উদাহরণ টানা হয়েছে।
২০২০ সালের বার্ষিক রিপোর্টে সব মিলিয়ে বিশ্বের ২১০টি দেশের মূল্যায়ন করেছে ‘ফ্রিডম হাউস’। রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার প্রশ্নে ভারত সহ ৭৩টি দেশের অবমূল্যায়ন ঘটানো হয়েছে। এই ৭৩টি দেশে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশ মানুষের বাস। গণতান্ত্রিক পরিবেশ ‘মুক্ত নয়’— এমন তকমা পাওয়া দেশের সংখ্যা ২০০৬ সালের পর থেকে এখন সর্বোচ্চ।