নিউজিল্যান্ড সফর মানেই বাংলাদেশের জন্য একরাশ হতাশা। দেশের মাটিতে যে দলের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়ে বাংলাদেশ, সেই দলটির ঘরের মাঠে দেখা মেলে অন্য বাংলাদেশের। ২০০১ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলে আসা বাংলাদেশ ৯ টেস্ট, ১৩ ওয়ানডে ও ৪টি টোয়েন্টির সবগুলোতে হেরেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ, কিউইদের মাটিতে বাংলাদেশের প্রাপ্তির খাতা এখনও শূন্য।
এবার প্রাপ্তির খাতায় কিছু যোগ করতে চায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানিয়েছেন, জয় পাওয়া কঠিন তবে অসম্ভব নয়। আগের দিন মোহাম্মদ মিঠুন বলেছেন, নতুন বলের চ্যালেঞ্জ জিততে পারলে ভালো কিছুই হবে। এবার অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন জানালেন, নিউজিল্যান্ড সফর থেকে কিছু একটা নিয়ে দেশে ফিরতে চান তারা।
কড়া নিয়মের মধ্যে থেকে সাত দিনের আইসোলেশন শেষ করেছে বাংলাদেশ দল। তৃতীয় দফার করোনা পরীক্ষায় সবাই নেগেটিভ হওয়ায় বুধবার থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা জিম শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে মাঠে অনুশীলন শুরু করলেন তামিম, মুশফিক, মুস্তাফিজ, সাইফউদ্দিনরা।
ঘরবন্দি দিনের অবসান হওয়ায় স্বভাবতই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ক্রিকেটাররা। বৃহস্পতিবার মাঠে ফিরে আরও চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন সবাই। সাইফউদ্দিনের নজর এখনই ম্যাচের দিকে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রাপ্তির খাতাটা যে খালি হয়ে পড়ে আছে, সেটাও আগে থেকেই মনে করেছেন তরুণ এই অলরাউন্ডার।
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টচার্চের লিনকন গ্রিনে অনুশীলনের পর সাইিউদ্দিন বলেন, ‘প্রত্যাশা অবশ্যই থাকবে, কারণ ওয়ানডেতে আমরা অনেক ভালো দল। আমরা যদি ভালো খেলতে পারি, দিনটা যদি আমাদের হয়, অবশ্যই ফল আমাদের পক্ষে কথা বলবে। টি-টোয়েন্টিও আছে, যেহেতু আমাদের প্রাপ্তির খাতা একদমই শূন্য, আমাদের চেষ্টা থাকবে এ সিরিজ থেকে কিছু নিয়ে যেন দেশে যেতে পারি।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে খেলেছেন সাইফউদ্দিন, তিনটিই তাদের মাটিতে। সেখানকার কন্ডিশন, আবহাওয়া সম্পর্কে ভালোই ধারণা আছে তার। দলের অন্য ক্রিকেটারাও জানেন এই কন্ডিশনে কতোটা কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়া লাগতে পারে। এ কারণে সুযোগ পেয়েই কন্ডিশন অনুযায়ী অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার শুরুতে ফিল্ডিং অনুশীলন করেন সাইফউদ্দিনরা। এরপর শুরু হয়ে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। সাইফউদ্দিন বলন, ‘আজ অনুশীলনে আমরা সবার আগে আমরা ফিল্ডিংটা নিয়ে কাজ করেছি। শর্ট ক্যাচ এবং হাই ক্যাচ নিয়ে কাজ হয়েছে। কারণ এখানে আবহাওয়া এবং বাতাসের একটা ব্যাপার থাকে, এটা মানিয়ে নেওয়ার জন্য ক্যাচিং করা।’
‘এরপর আমরা ছোট ছোট সেশনে ব্যাটিং এবং বোলিং করি। শেষে একটু ফিটনেস নিজে কাজ করেছি। যেহেতু আমরা সাত দিন ফিটনেস নিয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারিনি, এ কারণে আমরা ট্রেনারের নির্দেশনা অনুযায়ী রানিং করলাম। আরও যতোদিন সময় পাব, ছোট ছোট ট্রেনিং করে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।’
বন্দি দশা শেষ হওয়ায় দলের বাকিদের মতো সাইফউদ্দিনও হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। তবে তার মাথায় এটাও আছে, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে সব পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য থাকা উচিত, ‘কোয়ারেন্টিনের পর আজ অষ্টম দিনে ছোট ছোট গ্রুপে অনুশীলনে গেলাম। সব মিলিয়ে ভালো ছিল। হোম কোয়ারেন্টিন করে প্রথমবারের মতো এমন অভিজ্ঞতা হলো। যেহেতু আমরা খেলোয়াড়, সব ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি।’
কোয়ারেন্টিন শেষে কয়েকদিনের অনুশীলনের পর কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ২০ মার্চ ডানেডিনে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ২৩ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। এই ম্যাচটি হবে দিবা-রাত্রির। ২৬ মার্চ ওয়েলিংটনে শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।