বর্তমান সরকারের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় ভূমির যথাযথ প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূমির অবক্ষয় শতভাগ রোধ কারার জন্য কাজ করছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন পরিবেশ অধিদফতরে আয়োজিত ‘এস্টাব্লিশিং ন্যাশনাল ল্যান্ড ইউজ এন্ড ল্যান্ড ডিগ্রেডেশন প্রোফাইল টুওয়ার্ডস মেইনস্ট্রিমিং সাসটেইনেবল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রাকটিসেস ইন সেক্টর পলিসিস’ শীর্ষক প্রকল্পের তৃতীয় অন্তর্বর্তী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রিও কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মরুময়তা রোধ, ভূমির অবক্ষয় ও খরা মোকাবেলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘ভূমি ব্যবহার, মানচিত্র হালনাগাদকরণ, ভূমি অবক্ষয়ের কারণ ও সূচক চিহ্নিতকরণ, অবক্ষয় রোধ, প্রশমন বা পুনঃব্যবহারযোগ্য করার লক্ষ্যে টেকসই ভূমি ব্যবহারের তথ্য সৃজনে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। সৃজিত তথ্যের ভিত্তিতে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অবক্ষয়মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথচিত্র প্রণয়ন করবে।’
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি অকৃষি কাজে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ভূমির অবক্ষয় রোধ প্রক্রিয়া সূচক বা ক্ষেত্র নির্ধারণ এবং কার্যকর পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন পরিকল্পনার জন্য একটি সমৃদ্ধ তথ্যভাণ্ডার সৃজনের কাজ চলমান রয়েছে।
সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনিস্টিটিউট, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে।
ভূমির অবক্ষয় রোধে বিনিয়োগ হলে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এদেশের মানুষকে টিকে থাকার লড়াইয়ের সুযোগ করে দেবে যা পক্ষান্তরে জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করবে ও ভবিষ্যত উন্নয়নও টেকসই হবে।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যদি বর্তমান ভূমি ব্যবস্থাপনার যোগোপযোগী পরিবর্তন না করি তাহলে আগামীতে ঝুঁকিতে অধিক সংখ্যক দ্ররিদ্র মানুষের অভিবাসী হওয়া ছাড়া অন্য কোনও সুযোগ থাকবে না। জীবনযাপনের অত্যাবশ্যকীয় উপাদনের চাহিদা মেটাতে আমাদের আরও সচেতনতার সঙ্গে ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
এই লক্ষ্যে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি ও ব্যবহারের আর্থিক, সামাজিক এবং পরিবেশের উপকারিতা সম্পর্কিত সচেতনতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আলোচ্য প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কিছু মৌলিক তথ্য পাব যার ভিত্তিতে এদেশের ভূমির অবক্ষয় মোকাবেলার ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।
পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, প্রকল্পের পরিচালক ড. মুহাম্মদ সোহরাব আলী, প্রকল্পের সমন্বয়ক জালাল মো. সোয়েব প্রমুখ বক্তব্য দেন। ভূমিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি কর্মশালায় মত ব্যক্ত করেন।