আচমকা পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ফ্রান্সের মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির প্রণয়ন করা আইনের সমালোচনা করেছিলেন। মূলত তার প্রতিবাদ জানাতেই ফরাসি কর্তৃপক্ষ পাক কূটনীতিকের কাছে কৈফিয়ত তলব করেছে।
গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী ফ্রান্সের সমালোচনা করে বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠরা যখন সংখ্যালঘুকে বিচ্ছিন্ন করতে আইন পরিবর্তন করে তখন সেটা বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়।’
ফ্রান্সের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কার্টুন আঁকায় দেশটির এক শিক্ষককে শিরশ্ছেদের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহানবীকে ব্যঙ্গ করা মানে সমগ্র মুসলিমদের ব্যঙ্গ করা। ফরাসি রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি এমন দৃষ্টিভঙ্গি আইন দ্বারা সুরক্ষা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সমস্ত জনগণকে একত্রিত করতে হবে।
পাক প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিবাদে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের কূটনীতিককে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভীর বক্তব্যকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানায়। ফ্রান্সে মুসলিমদের নিয়ে করা আইনে কোনো বৈষম্যমূলক উপাদান নেই বলেও ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়।
সেখানে বলা হয়েছে, ধর্মীয় স্বাধীনতার মৌলিক নীতি এবং ন্যায়পরায়ণতার আলোকেই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সেখানে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের বিষয়ে কোনো পার্থক্য করা হয়নি। পাকিস্তানকে এটা বোঝা উচিত এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত।
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের নিম্ন আদালতে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদ বিরোধী’ নামে আইন পাস হয়। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো দাবি করছেন, মুসলিমরা ফ্রান্সের সমাজ থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ, লিঙ্গ সমতা এবং অন্যান্য মূল্যবোধ দূরে নিয়ে যাচ্ছে। এই আইন ব্যবহার করে ফ্রান্স কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহিংসতামূলক বা উসকানিমূলক কোনো কিছু ছড়ালে সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারবে।
গত বছরের অক্টোবরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো নবী মুহাম্মদের ব্যঙ্গচিত্র দেখানো সমর্থনে করে বক্তব্য দিলে যেসব দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ হয় পাকিস্তান তার মধ্যে অন্যতম।