ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে নতুন মার্কিন প্রশাসনের অধীনে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক আগামী দিনে আরো বাড়বে। তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সম্পৃক্ততারও আশ্বাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাতকালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো উন্নত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
উভয় পক্ষ মনে করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বে নতুন মার্কিন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর দু’দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন যে জাতির জনকের দণ্ডপ্রাপ্ত ঘাতক রাশেদ চৌধুরীকে আর দেরি না করে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো উচিত।
মোমেন জোর দিয়ে বলেন যে বাংলাদেশ গত এক দশকে প্রশংসনীয় আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরো ঘনিষ্ট সহায়তা ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। মোমেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কগুলোতে অরো বেশি মার্কিন বিনিয়োাগ চেয়ে জোর দিয়ে বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র আইসিটি সেক্টরে বিনিয়োাগকে অগ্রাধিকার ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচনা করতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সংরক্ষণ এবং পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিতে পারে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মোমেন বলেন, তাদের প্রত্যাবাসন বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গেছে।
জলবায়ু সম্পর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত জন কেরির সাথে তার সাম্প্রতিক টেলিফোন আলোচনার কথা স্মরণ করে ড মোমেন ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় আসন্ন ইউএনএফসিসিসির সিওপি ২৬ চলাকালেসহ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিপাক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়ভাবে কাজ করার আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত পর্যবেক্ষণ করেন যে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জনের কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব অর্জন করছে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কিত বিশাল মানবিক উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশের জন্য তার দেশের প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন যে এই ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি সোচ্চার রয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বার্ষিকী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর চলমান উদযাপন দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্গঠনের জন্য একটি ভাল উপলক্ষ উল্লেখ করে তিনি এ উদ্যাপনে যোগ দিতে চলতি বছর মার্কিন সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের ঢাকা সফরের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।