পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, দেশের পরিবেশের সুরক্ষায় সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। এজন্য দেশের পরিবেশের উন্নয়নে সরকার সম্ভাব্য সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবে। যেকোনো মূল্যেই দেশের পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
পরিবেশ মন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতীয় পরিবেশ কমিটির নির্বাহী কমিটির ১৫ তম সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮ এ পূর্বের নীতিমালার ১৫ টি বিষয় ছাড়াও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, পাহাড়, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ এবং জীবনিরাপত্তা, প্রতিবেশবান্ধব পর্যটন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা প্রস্তুতি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ নীতিতে চিহ্নিত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসমূহ তাদের স্ব-স্ব কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে কমিটি গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সাংবাদিকদের অবহিত করেন। তিনি এসময় কঠিন ও মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হাসপাতাল/ক্লিনিকে পরিবেশবান্ধব ইনসিনারেটর , ইটিপি ইত্যাদি স্থাপন করাতে নির্দেশনা প্রদান করা হবে। পলিথিন, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মন্ত্রী জানান, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ছিদ্রযুক্ত ইট তৈরি এবং বিভিন্ন ধরনের ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহার ধাপে ধাপে বাধ্যতামুলক করা হবে। ব্লক ইট তৈরীতে শুল্ক হ্রাস অথবা সরকারি প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ব্লক ইটের ব্যবহার বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশ মন্ত্রী জানান, নির্মাণ কাজের টেন্ডার সিডিউলে বায়ুদূষণরোধে সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়া হবে। কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্টের পাশাপাশি বিআরটিএ এবং পুলিশ প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে। নিয়মিতভাবে পর্যায়ক্রমে ফিটনেস বিহীন যানবাহন রাস্তা থেকে প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়া হবে।
পাহাড়, প্রতিবেশ সংরক্ষণে অবৈধভাবে পাহাড়কাটা বন্ধকরণ বিষয়ে মন্ত্রী জানান, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে পাহাড় কর্তন প্রয়োজন হলে বাধ্যতামূলকভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিকট থেকে হিল কাটিং ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে তদনুসারে পাহাড় কাটতে হবে। পাহাড় কাটার কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট প্রত্যাশী সংস্থা কর্তৃক কঠোরভাবে তদারকী করতে হবে। পরিবেশ মন্ত্রী জানান, পুকুর, ডোবা, খাল বিল, নদী ও কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক জলাধার ভরাট বা শ্রেণি পরিবর্তন করা নিরুৎসাহিত করা হবে। অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে ভরাট করার প্রয়োজন হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থা-এর আওতাধীন প্রাকৃতিক জলাশয়/পুকুরসমূহ বাধ্যতামূলকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় কোনো ভরাট কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী , পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মো. এনামুর রহমান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।