ফুসফুসকে রক্ষাকারী একটি প্রোটিনের ঘাটতি থাকার কারণেই এশিয়ার থেকে ইউরোপ ও নর্থ আমেরিকায় করোনাভাইরাস বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়। ভারতীয় ওই গবেষকরা এও জানিয়েছেন কিভাবে ভাইরাসটির মিউট্যান্ট ফর্ম মানুষকে আক্রান্ত করার নতুন নতুন পথ খুঁজে নিচ্ছে।
ইনফেকশন, জেনেটিকস অ্যান্ড ইভোলিউশন জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট ডি৬১৪জি মিউটেশনের বিশ্লেষণ করেছেন তারা। সেটাই নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপীয় জনগণকে আক্রান্ত করছে বেশি বেশি।
এই ধরনের ভাইরাস এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে যেখানে এই মিউট্যান্ট ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১.৯৫ শতাংশ ছিলো ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মাত্র ১০ সপ্তাহেই তা বেড়ে ৬৪.১১ শতাংশ হয়ে যায়।
কল্যানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সের গবেষকরা বলেছেন, এই ধরণটি তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেশি সময় নিচ্ছে এশিয়াতে। সেখানে ৫০ শতাংশ সংক্রমণ হতে সময় লেগেছে ৫.৫ মাস। ইউরোপে যেখানে লেগেছে ২.১৫ মাস আর নর্থ আমেরিকায় ২.৮৩ মাস।
গবেষকদের মতে, ইউরোপ ও নর্থ আমেরিকাজুড়ে প্রোটিন আলফা-অ্যান্টি-ট্রিপসিনের(এএটি) ঘাটতিই এর মূল কারণ। তার ফলেই সেখানে এই ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত বিস্তার হয়েছে আর এশিয়ায় একটু কম হয়েছে।
গবেষণার করেসপন্ডিং লেখক নিধান কে বিশ্বাস বলেন, ইউরোপীয় ও নর্থ আমেরিকার জনগণের মধ্যে এই প্রোটিনের ঘাটতি বেশি। তবে ঘাটতি কম পূর্ব এশিয়ার জনগণের মধ্যেও। বিশেষ করে প্রবল ঘাটতি দেখা গেছে ইটালি ও স্পেন এর বাসিন্দাদের মধ্যে।
এই প্রোটিনের অভাব নিউট্রোফিল ইলাস্টেজ অণুর পক্ষে ভাইরাসের বিস্তারের ক্ষেত্রগুলিতে কাজ করা আরও সহজ করে তোলে যার ফলস্বরূপ এই মিউট্যান্টের দ্রুততম বিস্তার ঘটে।
তবে এসব উপসংহার নিশ্চিত করতে আরো কিছু ল্যাবে তৈরি সেলের উপর গবেষণা দরকার আছে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের ধারণা এই গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এএটি সরবরাহের বিষয়ে ভাবতে পারলেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ সহজ হবে।