চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ মাসে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩২৪ কোটি ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসের তুলনায় ১৯৩ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯৬ কোটি ২২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, যা গত অর্থবছরের জানুয়ারি ছিল ৩৭ কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
জানা যায়, করোনাকালীন-২০২০ সালের জানুয়ারিতে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। গত ৭ মাস থেকে পর্যায়ক্রমে পণ্য আমদানি বাড়ছে এবং রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে সোনামসজিদ বন্দরে প্রতিমাসেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে স্থানীয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের দাবি।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের তদারকি ও কঠোর নজরদারির ফলে বন্দরে রাজস্ব আহরণ বাড়ছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব বৃদ্ধিতে কাস্টমস বদ্ধপরিকর। আমদানি-রফতানি বৃদ্ধি ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
তবে সুযোগ সন্ধানী একশ্রেণির আমদানিকারক সিএন্ডএফ এজেন্টরা রাজস্ব ফাঁকি দিতে সবসময় চেষ্টা করে আসছিলেন। বিশেষ করে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে এ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া গত ৭ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রফতানি ছাড়করণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকা সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের কাস্টমসের সরকারি কমিশনার মমিনুল ইসলাম জানান, রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে আমদানি-রফতানি বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান, স্থানীয়ভাবে কিছু ব্যবসায়ীর মধ্যে রাজনৈতিক কোন্দল ও মতানৈক্য থাকায় পণ্য আমাদনি-রফতানির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটে, যার প্রভাব অনেক সময় রাজস্ব বৃদ্ধির ওপর পড়ে থাকে।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন জানান, দীর্ঘ ১২ বছর এসোসিয়েশনের নির্বাচন হয়নি। ফলে সিএন্ডএফ এজেন্টরা এ বন্দর প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। এতে আমদানি-রফতানি ও রাজস্ব আহরণে প্রভাব পড়েছে। গত নভেম্বর মাসে এসোসিয়েশনের নির্বাচন হয়েছে। এর পর থেকে ব্যবসায়ীরা কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করে আমদানি-রফতানি চালাচ্ছে।
ফলে আমদানি-রফতানি বেড়েছে, বেড়েছে রাজস্ব। বন্দরে বর্তমানে কোনো চাঁদাবাজি নেই বললেই চলে। কাউকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।সেবা বৃদ্ধি না করলেও প্রতি বছর বন্দর মাসুল ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে অন্য বন্দরের চেয়ে এ বন্দরে আমদানি-রফতানি খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নত সেবা ও ভারী যন্ত্রপাতি না থাকায় আমদানি-রফতানিকারকরা এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারাচ্ছে। বৈষম্য দূর করা হলে বন্দরের ব্যবহার বাড়বে, বাড়বে রাজস্ব।