আজ রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সারাদেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য রাজধানীর ৫০টি হাসপাতাল ও রাজধানীর বাইরে ৯৫৫টি হাসপাতালকে প্রস্তুত করা। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘শুরুর দিনে সারাদেশে এক হাজার পাঁচটি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এজন্য দুই হাজার ৪০২ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রস্তুত করা হয়েছে। রাজধানীর ৫০টি স্থানে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। আজ যেসব কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখা হয়েছে, সব কেন্দ্রগুলোতে প্রস্তুতি ভালো আছে। আমরা আশা করছি, কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই টিকাদানের কাজ শুরু করতে পারব।’
প্রস্তুতির ঘাটতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু ছোট কেন্দ্রে বিশেষত মাতৃসদন, শিশু কেন্দ্রগুলোতে আমাদের কিছুটা প্রস্তুতির ঘাটতি আছে। এটা আজকের সকালের কথা। আশা করি সময়ের ব্যবধানে তার উন্নতি হয়েছে। আমরা এখানে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করব এবং সব কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করব। তারপর যেখানে যে সমস্যা আছে আমরা এখান থেকে সমাধান করার চেষ্টা করব।
রাজধানীর যে ৫০টি হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগ হবে—
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন:
বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয় ক্লিনিক, মিরপুরের ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, মহাখালীতে সংক্রামক রোগ হাসপাতাল, উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।
এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটির পাঁচটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র মগবাজারের নয়াটোলা, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি, মিরপুর মাজার রোডের নেকি বাড়ির টেক, মিরপুরের বর্ধিত পল্লবী এলাকা ও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মাতৃসদনে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ এস এম মামুন বলেন, ‘রোববার সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুরে আওরঙ্গজেব রোডে অবস্থিত ফার্টিলিটি সেন্টারে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা এর উদ্বোধন করবেন।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ক্লিনিক, ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মজীবী হাসপাতাল, আজিমপুর মা ও শিশু হাসপাতাল, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতাল, রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, পিলখানার বিজিবি হাসপাতাল, নয়াবাজারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, লালবাগে ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।
এছাড়া দক্ষিণ সিটির পাঁচটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র ধলপুরে নগর মাতৃসদন, বংশালের কসাইটুলী নগর মাতৃসদন, হাজারীবাগে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নগর মাতৃসদন, উত্তর মুগদা মাতৃসদন ও খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া মাতৃসদন কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।