আব্বাসের নতুন আরব পার্টি : ইসরাইলের কিংমেকার

অবশ্যই পরুন

ইসরাইলের পার্লামেন্ট, নেসেটে স্থান করে নেয়া আরব রাজনৈতিক দলগুলোর জোট দ্যা জয়েন্ট লিস্ট থেকে বেরিয়ে গেছে নেসেট সদস্য মানসুর আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড আরব লিস্ট। আরব দলগুলোর জোটে এই ভাঙনের পর ইসরাইলি দলগুলো তৎপর হয়েছে মানসুর আব্বাসের সমর্থন লাভের চেষ্টায়।

বিভক্ত নেসেটে ক্ষমতা লাভের চেষ্টায় আব্বাসের সমর্থনের ওপর এখন নির্ভর করছে কোন জোট ইসরাইলের ক্ষমতা লাভ করবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানসুর আব্বাসের আরব রাজনৈতিক দল আবির্ভূত হয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইলের কিংমেকার হিসেবে।

গত বছরের নির্বাচনে চার আরব রাজনৈতিক দলের জোট দ্যা জয়েন্ট লিস্ট ইসরাইলি নেসেটে ১৫ আসন লাভ করে। ইউনাইটেড আরব লিস্ট জোট থেকে বেরিয়ে গেলেও অপর তিন আরব দল এখনো জোটবদ্ধ আছে।

নেতানিয়াহু বা অন্য ইসরাইলি নেতাদের সাথে অপরাধ দমন ও ইসরাইলি আরব বাসিন্দাদের আবাসনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কাজের জন্য আব্বাসের নিজেকে উন্মুক্ত রাখার প্রেক্ষাপটে আরব জোট ভেঙে পড়েছে। ইসরাইলের বর্তমান জনসংখ্যার অন্তত ২০ ভাগ আরব বাসিন্দাদের নিয়ে গঠিত।

আব্বাসের দল ইসরাইলের পার্লামেন্টে কমই আসন পাওয়ার আশা করছেন। কিন্তু বিভক্ত নেসেটে বিজয়ী রাজনৈতিক জোটের ৬১ আসন অর্জনের প্রশ্নে, আব্বাসের সমর্থন ইসরাইলি দলগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সাম্প্রতিক জরিপের তথ্য অনুসারে, নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি বেশি আসন লাভ করলেও ইসরাইলের ক্ষমতা লাভের জন্য তা এককভাবে যথেষ্ট নয়। অল্প কিছু আসনের ব্যবধান বিশাল পরিবর্তন করতে পারে।

ইসরাইল ডেমোক্রেসি ইন্সটিটিউটের গবেষক আরিক রুদনিৎস্কি বলেন, ‘রাজনৈতিক অচলাবস্থাকে বিবেচনা করলে, যেকোনো আরব দল দুই পক্ষের লাভজনক ভূমিকা নিতে পারে আরব সমাজের জন্য সুবিধার বিনিময়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এটিই ইসলামিক মুভমেন্টের প্রধান রাজনৈতিক চিন্তা।’

ইসরাইলের ফিলিস্তিনি আরব বাসিন্দাদের মধ্যে কাজ করা ইসলামিক মুভমেন্ট ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের স্বাধীনতা ও স্বাধীকারের দাবি জানিয়ে আসছে।

ইসরাইলি আরবরা পূর্ণ নাগরিকত্ব ও ভোট দেয়ার ক্ষমতা পেলেও আবাসন ও অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে ইহুদি ইসরাইলিরা তাদের সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখেন।

ইসরাইলের সরকার গঠনে আগে কখনোই দেশটির কোনো আরব রাজনৈতিক দল যুক্ত হতে চায় নি বা তাদের আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে হয়তো একটি আরব ইসরাইলি দল বাইরে থেকে সমর্থনের মাধ্যমে কোনো একটি ইসরাইলি দলকে সরকার গঠনে সাহায্য করতে যাচ্ছে।

দুই বছরের ভেতর ইসরাইলে চতুর্থ বার সাধারণ নির্বাচন আগামী ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। আগের নির্বাচনী প্রচারণায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বর্ণবাদ ও আরব দলগুলোর বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এখন আরব ভোটারদের উদ্দেশ্য করে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন। অনেকেই একে জয়েন্ট লিস্ট জোটে আরো দ্রুত ভাঙনের ও ভোট দিতে আসা ভোটারদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা হিসেবে মনে করছেন।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১২ বছর দায়িত্ব পালন করছেন বেনজামিন নেতানিয়াহু। তার এই দায়িত্বের মেয়াদকে বাড়াতে এবং তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য ক্ষমতা লাভের উদ্দেশে একটি জোট গঠনের আশা করছেন নেতানিয়াহু।

রুদনিৎস্কি জানান, আব্বাসের দল এইক্ষেত্রে নিজেদের সুবিধা করে নিতে পারে।

ইসরাইলের রাজনৈতিক অচলাবস্থায়, ধর্মীয় রাজনৈতিক দল রিলিজিয়াস জায়নিস্ট পার্টি অপর ইহুদিবাদী জুইশ পাওয়ারের সাথে জোট গঠন করেছে। প্রয়াত ইহুদি রাব্বি মিয়ার কাহানের রাজনৈতিক দল কাচ পার্টি নিষিদ্ধ হওয়ার পর তার অনুসারীরা জুইশ পাওয়ার দলটি গঠন করে। ফিলিস্তিনিদের জোর করে বহিস্কার ও দেশটিতে ইহুদি ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচারণার কারণে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়। দল দুইটির ইসরাইলি ভোটারদের মধ্যে তিন দশমিক দুই পাঁচ ভাগ সমর্থন আছে।

জুইশ পাওয়ার নেতা ইতিমার বেন গেভির এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ইসরাইলের জনগণের জন্য, ইসরাইলের ভূমির জন্য ও ইসরাইলের তোরাহর (ধর্মগ্রন্থ) জন্য আমরা একত্রিত হয়েছি।’

সূত্র : ডেইলি সাবাহ

সর্বশেষ সংবাদ

রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তনেও সঙ্গে থাকার বার্তা জাপানের

রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে জাপান কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। রোববার (২৪...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ