ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে সমগ্র জম্মু-কাশ্মীরে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা। গতকাল শুকবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের থেকে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেয় ভারত সরকার। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয় এই উপত্যকায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে উপত্যকাকে সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করে মোদি সরকার। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় সরকারকে ফোর-জি ইন্টারনেট চালু করার সম্ভাবনা আছে কি-না তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে নির্দেশ দেয়।
গত বছরের আগস্টে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে ট্রায়ালভিত্তিতে ফোর-জি ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের অনুমতির বিষয়টি একটি বিশেষ কমিটি খতিয়ে দেখছে।
সরকার বলেছিল, জম্মু অঞ্চলের একটি জেলা এবং কাশ্মীরের একটি জেলায় ফোরজি অ্যাক্সেস দেওয়া হবে। এরপর গত বছরের ১৬ আগস্ট গান্ডারবাল ও উধমপুর জেলায় ফোরজি ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। এখন পুরো কাশ্মীরে পুনরায় চালু হলো ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ অসংখ্য মানবাধিকার সংগঠন বহুবার মোদি সরকারকে বিতর্কিত কাশ্মীরে ইন্টারনেট সেবা পুনরায় চালুর আহ্বান জানায়। করোনা মহামারির মধ্যে কাশ্মীরিরা যাতে সঠিক তথ্য সেবা পায় সেজন্যও ইন্টারনেট চালুর আহ্বান জানানো হয়।
মার্চে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে ইন্টারনেট সেবা বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করেন। পুনরায় ইন্টারনেট সেবা চালুর বিষয়টি বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান সর্বোচ্চ আদালত।
মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে ভারতবিরোধিতা চরম পর্যায়ে। ভারত থেকে স্বাধীনতা অর্জন অথবা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার জন্য সেখানে লড়াই করছে কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন।
১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। কাশ্মীরী বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সাধারণ কাশ্মীরীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত ভারত। ভারত এবং পাকিস্তান কাশ্মীর দখল করে আছে। তাদের উভয়ের দাবি পুরো কাশ্মীর তাদের একার। কাশ্মীরের একটি ছোট অংশ দখল করে নিয়েছে চীন।
সূত্র : এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে।