মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশে সমতার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ টিকা বিতরণে কোভ্যাক্স প্রকল্প চালু করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তবে এর মাধ্যমে সিংহভাগ ডোজের সরবরাহ পেতে চলেছে প্রতিবেশী ভারত। দেশটিতে ভ্যাকসিনের বর্তমান সরবরাহ চাহিদার তুলনায় বেশি হওয়ার পরও, সেখানে ৯ কোটি ৭২ লাখ ডোজ পাঠাবে কোভ্যাক্স।
হু’ পরিচালিত উদ্যোগটির আওতায় এপর্যন্ত ২শ’ কোটি ডোজের ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে চলতি মাসের শেষদিকে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশে মোট ৩৩ কোটি ৭২ লাখ ডোজ প্রথম চালান হিসেবে পাঠানো হবে।
গত বুধবার কোভ্যাক্সের অভ্যন্তরীণ বণ্টন পরিকল্পনার পূর্বাভাস প্রকাশ করা হয়। তবে এটি অন্তর্বর্তী পরিকল্পনা, যা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। মূলত, জনসংখ্যার বিচারেই করা হয়েছে সরবরাহের তারতম্য। ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানে ১ কোটি ৭২ লাখ সরবরাহ করা হবে, যা হবে দ্বিতীয় বৃহৎ চালান। তারপরের ১ কোটি ৬০ লাখ ডোজের তৃতীয় বৃহৎ চালান যাবে নাইজেরিয়ায়। আর ইন্দোনেশিয়া পাবে ১ কোটি ৩৭ লাখ ডোজ। বাদ পড়বে না উ. কোরিয়াও, সেখানে যাবে ২০ লাখ ডোজ।
তবে ভারতে সবচেয়ে বড় চালানটি যাওয়া নিয়ে অনেকের ভ্রু কুঁচকানোর কারণ; অন্যান্য দেশের মতো সেখানে টিকাগ্রহণে ইচ্ছুকদের সংখ্যা অনেকটাই কম। দেশটির প্রথম দফা টিকাদান কর্মসূচির আওতায় যাদেরকে যোগ্য হিসেবে ধরা হয়েছে, এপর্যন্ত টিকা নিয়েছেন তাদের মাত্র অর্ধেক।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দেশটির সবচেয়ে বড় উৎপাদক সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কাছে বর্তমানে সাড়ে পাঁচ কোটি ডোজ মজুদ আছে, এই প্রেক্ষিতে তারা অস্থায়ীভাবে উৎপাদন বন্ধও রেখেছে।
কোভিড-১৯ আক্রান্তের দিক থেকে অবশ্য বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। মোট সংক্রমিতের আনুষ্ঠানিক সংখ্যা ১ কোটির উপরে। তবে গত সেপ্টেম্বরে দৈনিক সংক্রমণ শীর্ষ অবস্থানে পৌঁছানোর পর থেকে তা এখন উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
কোভ্যাক্স উদ্যোগের তালিকায়; দ. কোরিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের মতো কিছু উচ্চ আয়ের দেশও আছে। তারা যথাক্রমে, ২৬ লাখ, ১৯ লাখ এবং আড়াই লাখ ডোজের চালান পাবে।
কোভ্যাক্সের মাধ্যমে দেওয়া টিকার মধ্যে বেশিরভাগ হচ্ছে ব্রিটিশ-সুইস ফার্মা অ্যাস্ট্রাজেনেকা পিএলসি আবিষ্কৃত। এছাড়া, ফাইজার থেকে কেনা হয়েছে ১২ লাখ। তবে এ টিকাটি অতি-হিমশীতল তাপমাত্রায় সংরক্ষণের দরকার হওয়ার তার সীমিত চালান পাবে কোভ্যাক্সে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ।
সূত্র: ব্লুমবার্গ