চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে যুদ্ধকালীন সময়ের সঙ্গে তুলনা করে এটি মোকাবিলায় কৌশল ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেছেন ১৯৮ পাতার পরিকল্পনা। অভিষেকের দ্বিতীয় দিনেই স্বাক্ষর করেছেন করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ১০টি নির্বাহী আদেশে। সব মিলিয়ে মহামারি মোকাবিলায় উঠেপড়ে লেগেছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের সময় তার পাশেই ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস ও দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি। এ সময় বাইডেন বলেন, পুরোপুরি যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো করে আমাদের জাতীয় কৌশল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে করোনা প্রতিরোধী ব্যবস্থা, সিরিঞ্জ, নিডলসহ মহামারি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সকল কিছুর উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে এবং পর্যাপ্ত যোগান নিশ্চিত করা হবে। বাইডেন আরো বলেন, আমি যখন এই পরিস্থিতিকে যুদ্ধকালীন বলি, তখন মানুষ অবাক হয়।
কিন্তু আমি গতকাল বলেছিলাম, করোনাভাইরাসে ৪ লাখের বেশি মার্কিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মৃত মার্কিন নাগরিকদের সংখ্যা থেকে বেশি।
এ সময় বাইডেন সাবধান করে দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখনো কঠিন দিন অপেক্ষা করছে। আগামী মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে মহামারিতে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত বছর আমরা দেখেছি, ফেডারেল সরকার জরুরি ভিত্তিতে এবং সমন্বয়ের সঙ্গে কাজ করেনি। এর ফলে আমাদের কঠিন মূল্য দিতে হয়েছে। নতুন কৌশল সমপর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই পরিকল্পনা অনেক বিস্তৃত। এটি বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে তৈরি, রাজনীতির ওপরে নয়। এটি সত্যকে অস্বীকার করা নয় বরং সত্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বেকার সরকার ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ২ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। তবে জানুয়ারি মাসের শেষদিকে এসেও যুক্তরাষ্ট্রে মোট ১ কোটি ৭৫ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। বাইডেন প্রশাসন আগামী ১০০ দিনে ১০ কোটি আমেরিকানকে ভ্যাকসিন প্রদানের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে কোভ্যাক্সে যুক্ত করতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন। এই প্রোগ্রামের অধীনে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া, কোভিড-১৯ পরীক্ষা বাড়াতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন।