প্রাচীন ও ক্ষুদ্রতম একটি মসজিদের সন্ধান মিলেছে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সমুদ্রের পাড়ে। উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা এলাকায় অবস্থিত এই মসজিদ। সোমবার দুপুরে কয়েকজন যুবক জঙ্গলটি পরিষ্কার করে মসজিদটির পুরো চিত্র বের করে আনার চেষ্টা করে।
এলাকাবাসী বলছেন, প্রাচীন এই মসজিদ সম্পর্কে তারা পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম শুনে আসছেন। এমন কি মসজিদটিকে কয়েকশ বছর পুরনো বলে দাবী করে তারা। মূলত মসজিদটি জঙ্গলে ঢাকা ছিল বলে কেউ সেখানে যেতেন না, অনেকের চোখেও পড়েনি। কারণ মসজিদটির আশেপাশে গাছ ও তার শেকড় এবং অন্যান্য বনলতা ভবনটির বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট। মসজিদটির দেয়াল ঘেঁষে একটি বড় মিম্বার রয়েছে, বাইরের দৈর্ঘ্য (উত্তর-দক্ষিণ) মিম্বারসহ ১৬ ফুট এবং বাইরের প্রস্থ (পূর্ব-পশ্চিম) ১২ ফুট। মসজিদটির ভেতরের দৈর্ঘ্য ৭ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। মসজিদটির একটি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোপ রয়েছে। মসজিদটি পোড়া ইট, বালু, চুন দিয়ে নির্মিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ষাটোর্ধ বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, ‘পূর্ব পুরুষদের কথা মতো এটি কয়েকশ বছর আগের পুরনো মসজিদ। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও এখানে লোকজন নামাজ আদায় করেছিল। এ প্রাচীন মসজিদটি পুরাকীর্তি অক্ষুণ্ণ রেখে নতুন রূপে সংস্কার করলে সেটি ঐতিহ্য হয়ে থাকবে। সংস্কারের পর মসজিদের ভেতরে প্রাচীন ক্ষুদ্র মসজিদের পুরাকীর্তি দৃশ্যমান হলে অনেক দেশি-বিদেশী দর্শনার্থীরাও দেখতে ভিড় করবে।’
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি আজিম উল্লাহ বলেন, ‘মসজিদটি অনেক বছর পুরনো। আমরা ছোট থেকেই শুনে আসছি এখানে একটা মসজিদ আছে। পূর্ব পুরুষরা বলেছে, বহু বছরে অনেক আগে বিদেশ থেকে কয়েকজন পীর সাহেব এদেশে এসে ইসলাম প্রচার করতেন। রাতে সেখানে তারা আত্মগোপন করতেন। তারাই সম্ভবত এই মসজিদটি তৈরি করেছিলেন নামাজ আদায়ের জন্য।’
টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন জানান, ‘মেরিন ড্রাইভের পশ্চিমে বনলতার আড়ালে একটি মসজিদের সন্ধান মেলেছে। এটি যে ক্ষুদ্রতম প্রাচীন মসজিদ তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। মেরিন ড্রাইভের পশ্চিমে কোন ধরনের ভবন নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় মসজিদটির সংস্কার করা যাচ্ছে না। অনুমতি পেলে এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’