প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র মানেই সুশাসনের ধারাবাহিকতা আর জনমতের প্রতি আইনপ্রণেতাদের শ্রদ্ধাপ্রকাশ। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে স্বাভাবিক জনজীবনেই অভ্যস্ত এমন দেশের নেতারা। ব্যতিক্রমী নন ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট্টে নিজেও। গত শুক্রবার যখন তিনিসহ তার মন্ত্রীসভার সকল সদস্য এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন, সেদিনও আর দশটা অন্যদিনের মতো সাইকেল চেপে দপ্তর ছেড়ে চলে যান তিনি।
সাইকেল চেপেই দপ্তর করার জন্য বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পান রুট্টে। ২০১০ সালে তিনি যেদিন প্রথম ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন, সেদিন থেকেই প্রহরী বেষ্টিত গাড়িবহরের আড়ম্বর এড়িয়ে এভাবেই তিনি রোজ অফিসে যাতায়াত করতেন।
শিশুকল্যাণে দেওয়া অর্থ সহায়তা সম্পর্কিত এক কেলেঙ্কারির রাজনৈতিক দায়ভার নিয়ে গত শুক্রবার সম্পূর্ণ ডাচ সরকার পদত্যাগ করে। ওই কেলেঙ্কারিতে ন্যায্য সহযোগিতা পাওয়া হাজার হাজার দম্পতি সরকারি অর্থ প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়ার দায়ে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
এনিয়ে অসন্তোষের মধ্যে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে রুট্টে বলেন, তিনি নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত রাজা উইলেম- অ্যালেক্সান্ডার’কে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, অভিযুক্ত অভিভাবকদের ক্ষতিপূরণে তার সরকার অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। সঙ্গে ছিল করোনাভাইরাস প্রতিরোধী যুদ্ধ জোরদার করার অঙ্গীকার।
“সম্পূর্ণ ব্যবস্থাটি যে ব্যর্থ তা নিয়ে সকলের সঙ্গে আমরাও একমত। এর দায় আমাদের মাথা পেতে নিতে হবে। সেজন্যেই আমি নিজের এবং নিজ মন্ত্রীসভার সকলের পদত্যাগের প্রস্তাব রাজার কাছে দিয়েছি। তার সম্মতি আসা মাত্রই আমরা পদত্যাগ করব।”
এই সিদ্ধান্ত অবশ্য প্রতীকী। কারণ নেদারল্যান্ডে আগামী ১৭ মার্চ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন জোট সরকার গঠনের আগপর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অংশ হিসেবে রুট্টে নিজ দপ্তরেই নিয়োজিত থাকবেন।
তবে পদত্যাগের মাধ্যমে রূট্টের একদশক নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দপ্তরে থাকার অবসান ঘটলো। তবে আগামী নির্বাচনে তার দলের জয়ের বেশ জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে তিনিই নতুন সরকার গঠনে এগিয়ে আছেন।