রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশি দেশটির মন্ত্রীসভায় বিপুল পরিবর্তন করেছেন। এর অংশ হিসেবে শনিবার নতুন ১২ মন্ত্রীকে নিয়োগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী মাশিশি তিউনিসিয়ার নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ওয়ালিদ জাহবিকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাউফিক শরফুদ্দিনের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদের ঘনিষ্ঠ শরফুদ্দিনকে এই মাসের শুরুতে পদচ্যুত করা হয়।
প্রেসিডেন্ট সাঈদের সাথে তার বিরোধ থেকেই প্রধানমন্ত্রী মাশিশি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর এই দুই ব্যক্তির মাঝে বিরোধ দেশটির সংস্কার কাজ ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিপূর্ণ করেছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি ব্যবস্থাপনার সমালোচনার মধ্যে দেশটির নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হাদি খাইরি।
দেশটিতে বর্তমানে এক লাখ ৭৫ হাজারের বেশি করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী আছেন। ভাইরাস সংক্রমণে তিউনিসিয়ায় এই পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৫২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাস প্রতিরোধে দেশটিতে কবে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে তা এখনো অজানা।
মন্ত্রীসভার এই পরিবর্তন সরকারি জোটের মধ্যেও মতবিরোধ তৈরি করেছে। সরকারি জোটের অন্তর্ভুক্ত কারামা পার্টি মন্ত্রীসভার পরিবর্তনে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সাথে সাথে তারা জোট ত্যাগ করার হুমকি দিয়েছে।
এছাড়া তিউনিসিয়ার নতুন বিচারমন্ত্রী হিসেবে ইউসুফ জুয়াগি, জ্বালানিমন্ত্রী সুফিয়ান বিন তুনিস ও কৃষিমন্ত্রী হিসেবে ওসামা খারিজিকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মাশিশি।
অন্যদিকে নতুন পরিবেশমন্ত্রী হিসেবে শিহাব বিন আহমদ ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ইউসুফ বিন ইবরাহীম নিয়োগ পেয়েছেন।
নতুন নিয়োগ করা মন্ত্রীদের নাম ঘোষণার সময় হিশাম মাশিশি বলেন, ‘পরের ধাপ চ্যালেঞ্জপূর্ণ। অর্থনীতির প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য জরুরি দক্ষতা ও সঙ্গতির বৃদ্ধি।’
২০১১ সালে আরব বসন্তের বিপ্লবের পর তিউনিসিয়ায় গণতন্ত্রের সূচনা হলেও দেশটির অর্থনীতি এখনো ভঙ্গুর। ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর দেশটিতে বিভক্ত এক পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। পার্লামেন্টের সদস্য দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক দেশটিতে স্থিতিশীল সরকার গঠন ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে বাধা তৈরি করছে।
সূত্র : আলজাজিরা