পূর্ব আফ্রিকার দেশ উগান্ডায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়েরি মুসেভেনিকে জয়ী ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। অবশ্য বিরোধীরা এই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে জনগণকে ফলাফল প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে উগান্ডার নির্বাচন কমিশন চেয়ারম্যান সিমন মুগেনি বায়াবাকামা জানান, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইয়েরি মুসেভেনি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার ভোট পেয়েছেন, যা মোট ভোটের ৫৮ দশমিক ৬৪ ভাগ। অন্যদিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ববি ওয়াইন ৩৪ দশমিক ৮৩ ভাগের অংশ হিসেবে পেয়েছেন ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ভোট।
নির্বাচনের এই ফলাফলে ৩৫ বছর ধরে উগান্ডা শাসন করে আসা ৭৬ বছর বয়সী মুসেভেনির ক্ষমতার মেয়াদ আরেক দফা বাড়লো।
নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ৩৮ বছর বয়সী ববি ওয়াইন রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং তার ভাষায় স্বৈরতন্ত্র ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের আহ্বান জানিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
এ দিকে শনিবার রাজধানী কামপালায় পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়। নির্বাচনের আগেই সরকার দেশটিতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন আছে।
সঙ্গীতশিল্পী থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া ববি ওয়াইন শুক্রবার জানান, তার কাছে ভিডিও প্রমাণ আছে নির্বাচনে প্রতারণা করা হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ চালু হলে তিনি এই ভিডিও চিত্র সরবরাহ করবেন। নির্বাচনের ফলাফলে প্রতারণার জন্য তিনি মুসেভেনিকে অভিযুক্ত করেন। অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে উগান্ডার ইতিহাসে ‘সর্বাধিক প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচন’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে বায়াবাকামা জানিয়েছেন, উগান্ডার আইন অনুসারে তার তদন্ত করা হবে।
এ দিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শনিবার নিরাপত্তা বাহিনী ববি ওয়াইনের বাসভবনে বেষ্টনি দিয়ে রেখেছে। আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের ওই বাসভবনে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে।
অপর দিকে, ববি ওয়াইন আলজাজিরার কাছে বলেন, কর্তৃপক্ষ তাকে তার বাসভবনের বাইরে যেতে বাধা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র ডিও আকিকি রয়টার্সকে বলেন, ববি ওয়াইনের বাড়িতে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তার বাড়ির বাইরে যাওয়ার ঝুঁকির বিষয়ে নিরীক্ষন করছেন। ববি ওয়াইনের নিজের নিরাপত্তার জন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার উগান্ডায় এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রচারণার সময় নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধী দলীয় প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর ধরপাকড় চালায়। নির্বাচনী সহিংসতায় দেশটিতে ৫০ জনের বেশি লোক নিহত হয়।
সূত্র : আলজাজিরা