গত বছর ইসলাম ধর্ম অবমাননাসহ নানা বিষয়ে বেপরোয়া মন্তব্য করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে ছাড় দেননি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও। তবে এবার দুজনের মধ্যে সুম্পর্কের আভাস মেলেছে।
তিক্ত সম্পর্ক পেছনে ফেলে নতুন বছরে ম্যাক্রোঁকে চিঠি লিখে দুঃখ প্রকাশ করলেন এরদোয়ান। ফরাসি প্রেসিডেন্টও চিঠির উত্তর দিতে একদমই ভুল করেননি। দু’দেশের সুসম্পর্ক পুনরায় গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে এরদোনয়াকে উত্তর লিখে পাঠালেন তিনি। দুজনের চিঠি বিনিময়ের বিষয়টি শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) নিশ্চিত করেছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এরদোয়ানের চিঠির জবাব খুবই চমৎকারভাবে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। চিঠির শুরুতেই ‘প্রিয় তাইয়েপ’ লিখে শুরু করেন তিনি। তুরস্ক ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে এরদোয়ানকে জানান ম্যাক্রোঁ। আঙ্কারার সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি দুজনের বৈঠক আয়োজনেরও ইচ্ছে পোষণ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
এ বিষয়ে আঙ্কারা জানিয়েছে সিরিয়া, লিবিয়া ও সন্ত্রাসবাদসহ আঞ্চলিক ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান করতে গিয়ে ফ্রান্সসহ প্রতিবেশী দেশ গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ইইউর নেতারা। দেশটির কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে কাজও বেশ এগিয়ে নিয়েছে।
সিরিয়া ও লিবিয়া ইস্যু ছাড়াও বিরোধপূর্ণ অঞ্চল নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে আঙ্কারা-প্যারিস। অবশেষে দু’দেশের প্রেসিডেন্টের ইতিবাচক চিঠি বিনিময়ে সংকট কিছুটা কাটবে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ইসলাম ধর্ম সংকটে রয়েছে গত বছরে অক্টোবরে এমন বেপরোয়া মন্তব্য করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ‘ইসলামি বিচ্ছিন্নতাবাদ’-এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ম্যাক্রোঁর মানসিক চিকিৎসা জরুরি বলে মন্তব্য করেন এরদোয়ান। এরপর থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।