বরফের চাদরে ঢেকে গেছে গ্রেট বৃটেনের বহু অঞ্চল।বরফে ঢেকে রয়েছে রাস্তাঘাট, বাড়ির কার্নিশ। তাপমাত্রাও হিমাঙ্কের নীচে নেমে গেছে৷ ভারি বরফের কারণে অনেক স্থানে দূর যাত্রীদের কষ্টের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ৷ কোথাও বরফের মাঝে লোকজনকে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা গেছে। শীতে কাবু হয়েও পর্যটকরা বেরিয়ে পড়েন বরফে ঢাকা এলাকা সমূহ ঘুরতে ৷
শুক্রবার ( ১৫ জানুয়ারি) স্কটল্যান্ডে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হতে পারে। উত্তর ইংল্যান্ডের কিছু অংশ ২০ সেন্টিমিটারের মতো হতে পারে। মেট অফিস রেকর্ডিংয়ে স্কটল্যান্ডের স্ট্রাথাল্লানে ১১ সেন্টিমিটার তুষারপাত হয়েছে। একই সময় নর্থম্বারল্যান্ডের কিছু অংশ সাদা রঙের ১০ সেন্টিমিটার বরফে ছেয়ে গিয়েছে। ওয়েস্ট ইয়র্কসের এ্যালবামারেল ৯ সেন্টিমিটার রেকর্ড করেছে।
শনিবার ১৬ জানুয়ারি আরও বরফের সতর্কতা এবং হিমশীতল তাপমাত্রা স্থায়ী হওয়ার আশংকা রয়েছে। দুর্যোগময় আবহাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে বৃটেন জুড়ে। স্কটল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি তুষারপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্কটল্যান্ড এবং উত্তর ইংল্যান্ডে ৫-১০ সেন্টিমিটার তুষার জমে থাকতে এমনকি সম্ভবত সর্বোচ্চ ২০ সেন্টিমিটার হতে পারে।
লকডাউনের কারণে বরফে উল্লাস ও পার্কে জমায়েতের বিরুদ্ধে পুলিশ সক্রিয় হয়েছে। হোম সেক্রেটারি প্রীতি প্যাটেল পুলিশকে জানিয়েছেন, পার্কের বেঞ্চে কাউকে বসে থাকতে দেখলেও তারা প্রশ্ন করতে পারেন। পুলিশও আগের চেয়ে অনেক কঠোর হয়েছে। জরিমানা করার ক্ষেত্রে কোন অজুহাত মানছে না।
মেট কমিশনার ডেম ক্রেসিদা ডিক এই লকডাউন চলাকালীন কর্মকর্তাদের আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিধিগুলি অনুসরণ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসাধারণকে জানাতে থাকতে হবে এবং আইন লঙ্গনের জন্য জরিমানা নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার ১৪ জানুয়ারি দিনের প্রথম প্রহরে দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ও বরফ গলে বন্যার জলের মত স্রোতের সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তীতে এমন বৃষ্টিপাত হলে জনবসতিগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। মোবাইল ফোনগুলোর টাওয়ার অপারেশনের বাইরে চলে যেতে পারে।
স্কটল্যান্ড এবং নর্থ ইংল্যান্ডে ভারী তুষার এবং হিমশীতল বৃষ্টিপাত করোনা টিকাদানকে ব্যাহত করেছে। নিউক্যাসলে হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিরা বয়স্ক ব্যক্তিদের আবহাওয়ার কারণে গণ টিকা কেন্দ্রের দিকে না যাওয়ার এবং তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন। ইয়র্কশায়ার সহ পার্শবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে চালকেরা বরফের উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে আটকে গেছেন বিভিন্ন স্থানে।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল লিডসে। সেখানে একটি গাড়ি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। কাউন্টি ডারহামের ড্রাইভওয়েতে তুষারপাতে অনেক গাড়ি আটকে থাকতে দেখা গেছে। লেস্টার এবং এসেক্সে গাড়িগুলি একটি আরেকটির সাথে ধাক্কা খেয়ে লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। ওয়েস্ট ইয়র্কসের হ্যালিফ্যাক্সের পাহাড়ের নীচে একটি বাস ঢুকে যাওয়ার ভয়াবহ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে।
হাডার্সফিল্ডে আরও এক গাড়িচালক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অন্য একটি গাড়িতে ধাক্কা দেয়ার আগে নিচের দিকে রাস্তার বাইরে পিছলে যায়। ভারী তুষারপাতে ইয়র্কশায়ার এম্বুলেন্স সার্ভিস বাধাগ্রস্থ হয়েছে। করোনা রোগীদের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিপদজনক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।