spot_img

সেচ প্রকল্পে কৃষকের বছরে খরচ সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

অবশ্যই পরুন

দেশের কৃষি উৎপাদনে বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত অগভীর নলকূপই ভরসা কৃষকের সেচ চাহিদার বড় অংশ। এ সেচযন্ত্রের ডিজেল ও ইঞ্জিন অয়েলসহ সেচ মৌসুম শুরুতে ওভারহোলিং ও মেরামতে কৃষকের খরচ বাড়িয়ে দেয়।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডিজেল চালিত সেচযন্ত্রে প্রতি বছর বাড়তি খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

বিএডিসির তথ্যমতে, দেশে কৃষি জমিতে সেচ প্রদানে এখনও অগভীর নলকূপেরই প্রাধান্য রয়েছে। সেচকাজে গভীর নলকূপের অবদান ১৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। অন্যদিকে শক্তিচালিত পাম্পের অবদান ২২ দশমিক ৩৫ শতাংশ ও অগভীর নলকূপের ৫৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

২০১৮-১৯ সেচ মৌসুমের সেচযন্ত্র জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৌসুমে মোট সেচকৃত জমির পরিমাণ ছিল ৫৫ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টর , যা মোট সেচযোগ্য জমির ৭৩ শতাংশ। মোট সেচকৃত এলাকার ৪৪ শতাংশ জমিতে সেচ প্রদানে ব্যবহার করা হয়েছে বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র।

অন্যদিকে ৫৬ শতাংশ জমিতে সেচ দিতে ব্যবহার করা হয় ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র।ডিজেল চালিত সেচযন্ত্রের বাড়তি খরচের নানান তথ্য উঠে এসেছে বিএডিসির সমীক্ষায়। সমীক্ষা পরিচালনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র সেচ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. জিয়াউল হক।

তিনি দেখিয়েছেন, ডিজেল চালিত ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫৪টি অগভীর নলকূপে ডিজেল ও ইঞ্জিন অয়েল বাবদ বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হয় প্রায় ২ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। এসব অগভীর নলকূপে সেচ মৌসুমে ওভারহোলিং, মেরামত ও পরিচালন খরচ পড়ে ২ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা।

ডিজেল চালিত ২ লাখ ৯ হাজার ৬৪৪টি অগভীর নলকূপকে বিদ্যুৎ বা সৌরশক্তি চালিত সেচ পাম্পে রূপান্তরকরণে সেচযন্ত্র পরিচালনা বাবদ বাড়তি খরচ হবে ১১৬ কোটি টাকা। ফলে মোট সাশ্রয় হবে ৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

কৃষিকাজে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০১৯ অনুযায়ী দুটি নলকূপের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব, কমান্ড এরিয়া সুনির্দিষ্টকরণসহ সেচযন্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণ এবং অগভীর নলকূপের কমান্ড এরিয়া ৬ হেক্টর নির্ধারিত রয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী সারাদেশে মোট ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৮টি অগভীর নলকূপ প্রয়োজন।

বর্তমানে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩৪টি বিদ্যুতচালিত অগভীর নলকূপ রয়েছে। সে হিসেবে আরও ২ লাখ ৯ হাজার ৬৪৪টি বিদ্যুত চালিত সেচযন্ত্র প্রয়োজন। অন্যদিকে বর্তমানে অপসারণযোগ্য সেচযন্ত্রের সংখ্যা ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫৪। এর মধ্যে ২ লাখ ৯ হাজার ৬৪৪টি ডিজেল চালিত অগভীর নলকূপকে দ্রুত বিদ্যুৎ অথবা সৌরচালিত সেচযন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে।

এটি করতে হলে বাড়তি তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হতে পারে। এ বিষয়ে বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট গবেষক মো. জিয়াউল হক বলেন, ডিজেল চালিত সেচযন্ত্রে খরচ বেশি হওয়ায় কৃষক ও মালিক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র অপসারণ করে তা দ্রুত পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুৎ বা সৌরশক্তি চালিত সেচযন্ত্রে রূপান্তর প্রয়োজন।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটি করতে হলে ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র অপসারণের জন্য কৃষিকাজে পানি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা অনুযায়ী সব সেচযন্ত্রে লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনকারী সেচযন্ত্র অপসারণ করা, লাইসেন্স বিহীন সেচযন্ত্র ও যেসব সেচযন্ত্রের সেচ খরচ বেশি তা দ্রুত অপসারণ করে কৃষিকে স্মার্ট করা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

হাফপ্যান্ট পরে কনসার্ট করায় গায়িকাকে আক্রমণ

ভারতীয় গায়িকা সুনিধি চৌহান। বলিউডের বহু ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। ‘মস্ত’ ছবির ‘রুকি রুকি সি জিন্দেগি’ গানের পরই জনপ্রিয়তা...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ