spot_img

প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা চান নির্বাচন কমিশনাররা

অবশ্যই পরুন

প্রতিমন্ত্রীর সমান মর্যাদা নিয়ে চলতে চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনাররা। তাদের বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও কমিশনের কাজে জেলায় ভ্রমণে টিএ-ডিএসহ সব ভাতা চান।

এমনকি মাসিক বেতন, অন্যান্য ভাতা উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সমান দাবি। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরে ভ্রমণে গাড়িতে জাতীয় পতাকা ও কমিশনের পতাকা ব্যবহার করার বিধান রেখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারগণের বেতন, ভাতাদি, পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত আইন-২০২০র খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে বিচারপতিরা পান না এমন সুবিধাও রাখা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে পেনশন সুবিধাও। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রোববার (৩ জানুয়ারি) কমিশনের ৭৪তম সভায় এ খসড়াটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। ইতোপূর্বে কমিশনের ৬২তম সভায় তোলা হয়। সেখানে প্রতিমন্ত্রীর সমান সুযোগ রাখার বিষয়টি ছিল না। কাজেই সেই সভা থেকে সংশোধনের প্রস্তাবটি ফের আইন সংস্কার কমিটিতে পাঠানো হয়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বিচারপতিদের সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন নির্বাচন কমিশনাররা। সে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে খসড়া আইন করা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনাররা প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদার সমান। সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি ইসির আইন সংস্কার সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে প্রতিমন্ত্রীর সমান সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি খসড়ায় অর্ন্তভুক্তির পর অনুমোদন দেয়া হয়। এ কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। এর সদস্যরা ১৯ আগস্ট, ২৬ সেপ্টম্বর, ৮ অক্টোবর এবং ১১ ও ১২ নভেম্বর বৈঠক করে এটি চূড়ান্ত করেন। এছাড়া সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদেরও খসড়াটি দেখানো হয়েছে।

আইন সংস্কার কমিটির একাধিক সদস্য জানান, আপিল বিভাগের বিচারপতির সমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের সমান চার নির্বাচন কমিশনার সুযোগ-সুবিধাদি পেয়ে আসছেন। তবুও কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত আইন পাসের প্রক্রিয়া চলছে। তবে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আইন প্রণয়নের দাবি থাকলেও সে বিষয়ে ইসির কোনও উদ্যোগ নেই।

ড. শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি কমিশন নিয়োগ সংক্রান্ত আইনের খসড়া তৈরি করলেও সেটি আর বেশীদুর আগায়নি। যদিও এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া তৈরি ইসির কাজ নয়, তবে তারা সুপারিশ করতে পারেন। জানা গেছে, খসড়া আইনের ১৫(৩) ধারায় আবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর প্রাধিকার অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনারদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার বিধান রাখা হয়েছে।

১৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, গার্ড শেডসহ আসবাবপত্রে সজ্জিত বাসা পাবেন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা। এ বাসার গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিল ইসি সচিবালয় বহন করবে। বাড়ি না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনাররা মাসে ৫০ হাজার ৬০০ টাকা হারে ভাতা পাবেন। এর বাইরেও ধারা ১১ অনুযায়ী সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের মাসে ১৬ হাজার টাকা নিরাপত্তা ভাতাও পাবেন।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, সিইসি কেএম নূরুল হুদা মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে থাকেন। বাকি চার কমিশনার সরকারি বাসভবনে নয় নিজ বাসায় থাকেন। বাসাগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে আসছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এবার সেটি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আইনের ১৬(৫) ধারায় বলা হয়েছে, ‘দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার সরকার কর্তৃক প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদার জন্য নির্ধারিত সময় জারিকৃত আদেশ অনুযায়ী টিএ ও ডিএসহ সব ভাতা ও সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।’

এছাড়া ১৬(৬) ধারায় বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর এলাকার বাইরে সরকারি ভ্রমণে গাড়িতে জাতীয় পতাকা ও নির্বাচন কমিশনের পতাকা ব্যবহার করতে পারবেন। বর্তমানে কমিশনাররা গাড়িতে শুধু জাতীয় পতাকা ব্যবহার করেন। এ আইন পাস হলে তারা দুটি পতাকা ব্যবহার করতে পারবেন। তারা আরও জানান, বর্তমানে কমিশনাররা পাচক ভাতা পান না। খসড়া আইনে পাচক ভাতা হিসেবে মাসে ১৬ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।

বিভিন্ন পেশা থেকে অবসর নেয়া কর্মকর্তাদের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। যে পেশা থেকে অবসর নেন সেখান থেকে তারা পেনশন পান। কিন্তু খসড়া আইনে ৩ বছর নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করলে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগের বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৫ বছর দায়িত্ব পালন করলে ৫/৫ হারে সর্বশেষ উত্তেলিত বেতনের শতভাগ, ৪ বছর দায়িত্ব পালন করলে ৪/৫ হারে ৮০ ভাগ এবং ৩ বছর পূর্তিতে ৩/৫ হারে ৬০ ভাগ মাসিক পেনশন পাবেন।

যদিও প্রাথমিক খসড়ায় ৬ মাস দায়িত্ব পালন করলেই পেনশন দেয়ার প্রস্তাব করা হয়। সেটি থেকে সরে ৩ বছরের বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনাররা মারা গেলে তাদের স্ত্রী বা স্বামী আমৃত্যু এ সুযোগ পাবেন। তাদের অবর্তমানে ছেলে ২৫ বছর পর্যন্ত সেই ভাতা পাবেন। খসড়া আইনে প্রতি মাসে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ বিশেষ ভাতা, শ্রান্তি বিনোদন ভাতা, উৎসব ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, চিকিৎসা সুবিধাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে এ আইনে।

সর্বশেষ সংবাদ

বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নীতিগত সিদ্ধান্ত

বিতর্কিত 'সাইবার নিরাপত্তা আইন' বাতিল করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ