দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের তেল ট্যাংকার অবরোধ ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটনকে ‘মারাত্মক ভুল’ না করতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে রাশিয়া। একইসঙ্গে ওয়াশিংটনকে সংযম প্রদর্শনের বার্তাও দিয়েছে মস্কো। পাশাপাশি মিত্র দেশ ভেনেজুয়েলার প্রতি সমর্থনও পুনর্ব্যক্ত করেছে রাশিয়া।
সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, ভেনেজুয়েলা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘মারাত্মক ভুল’ না করার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়ে দেশটি বলেছে, তারা তাদের মিত্র দেশ ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ‘নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ’ রাখছে।
এর আগে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী ট্যাংকারে অবরোধের নির্দেশ দেন। এতে ওয়াশিংটন ও প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বেড়ে যায়। তবে ভেনেজুয়েলা জানিয়েছে, এই ঘোষণার ফলে তাদের অপরিশোধিত তেল রপ্তানি ব্যাহত হয়নি। এতে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটির দৃঢ় অবস্থানের ইঙ্গিত মিলেছে।
মাদুরো দীর্ঘদিন ধরেই ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি নিয়মিতভাবে মস্কো সফর করে আসছেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তারা আশা করে হোয়াইট হাউস ‘কোনো মারাত্মক ভুল করবে না’ এবং এমন পরিস্থিতিতে আর এগোবে না, যা পুরো পশ্চিম গোলার্ধের জন্য অনিশ্চিত ও বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
রাশিয়ার এই মন্ত্রণালয়টি চলমান পরিস্থিতিতে ‘উত্তেজনা প্রশমন’ করার আহ্বান জানিয়ে মাদুরো সরকারের প্রতি সমর্থনও পুনর্ব্যক্ত করে। এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ‘নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ’ রাখছে। এমনকি ভেনেজুয়েলাকে তারা তাদের ‘মিত্র ও অংশীদার’ হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘পরিস্থিতির কোনও অনিশ্চিত রূপ নেয়া ঠেকাতে আমরা অবশ্যই এই অঞ্চলের সব দেশকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছি’। এই অবরোধ বাস্তবে কীভাবে কার্যকর হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এর আগে এই সপ্তাহেই দেয়া ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌবহর দিয়ে ভেনেজুয়েলাকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়েছে’। এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা আরও জোরালো করেছে।
এছাড়া চলতি মাসের শুরুতে এক ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর প্রতি নিজের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

