কারাবন্দি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জেলজীবনের ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন ইমরান খান ও তার প্রথম স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথের দুই পুত্র কাসিম খান ও সুলাইমান খান। ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজের এক সাক্ষাৎকারে উঠে আসে বাবার সম্পর্কে তাদের নানা ভাবনার কথা।
কাসিম ও সুলাইমান— দু’জনের মুখেই শোনা যায় কারাগারের মানবেতর পরিবেশের কথা। জানান— মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের যেসব কারা কক্ষে রাখা হয়, তেমনই এক আলো-বাতাসহীন ‘ডেথ সেল’-এ রাখা হয়েছে ইমরানকে।
ইমরান খানের পুত্র কাসিম খান বলেন, ‘কারাগারের পরিস্থিতি ভয়াবহ। শুধু খারাপ নয়— ভয়াবহ’।
অন্যদিকে, ইমরান খানের আরেক পুত্র সুলাইমান খান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বাবাকে যে কক্ষে রাখা হয়েছে, সেটাকে ‘ডেথ সেল’ বলা হয়। এর আগে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিদেরও এমন ছোট সেলে রাখা হয়েছে, যেখানে বলতে গেলে কোনো আলোই নেই। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দেয়া হয়।
ক্রমাগত সরকারের কঠোর অবস্থান দেখে ইমরানপুত্রদের শঙ্কা— তারা হয়তো আর কখনও দেখতে পাবে না বাবাকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইমরান খানের সাথে তাদের সাক্ষাতের সুযোগ করে দেয়ার আশ্বাস দিলেও, এতে তেমন ভরসা করতে পারছেন না তারা।
এদিকে, ‘ডেথ সেল’-এ ইমারান খানকে রাখার অভিযোগ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশের পরও নীরব ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার তিনি। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের একমাত্র ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের নায়কও। অথচ, তার এই বিপদের মুহূর্তে কথা বলার মতো পাশে নেই কোন ক্রিকেটার।
কাসিম খান আরও বলেন, পরিস্থিতি ক্রমেই আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা আগের চেয়ে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। ফলে এখান থেকে বেরিয়ে আসার পথ আরও কঠিন হচ্ছে। যাদের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তাদের সাথে কথা বললে প্রতিবারই তাদের কণ্ঠে আগের চেয়ে কম আত্মবিশ্বাস শোনা যায়। তাই এখন আমরা সত্যিই আশঙ্কা করছি— হয়তো আর কখনও তাকে দেখতে পাব না।
সুলাইমান খান জানান, মুক্তির বিনিময়ে কোনো রাজনৈতিক আপোসে যাবেন না ইমরান খান। তবে এখন কেবল আন্তর্জাতিক চাপকেই তার মুক্তির একমাত্র কার্যকর উপায় হিসেবে মনে করছেন তারা।
প্রায় আড়াই বছর ধরে কারাবন্দি পাকিস্তানের জনপ্রিয় এ রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক ক্রিকেটার। ২০২৩ সালের মে মাসে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হলেও, ওই বছরের আগস্টে আবারও বন্দি হন তিনি।

