থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে টানা ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, অনেক মানুষ ঘরবাড়ি, হোটেল ও দোকানপাটে আটকা পড়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা নৌকা ও সেনাবাহিনীর ট্রাক ব্যবহার করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন। সেইসাথে, শিশুদের বাঁচাতে বহু পরিবার ফোলানো বস্তুকে অস্থায়ী নৌকার মতো ব্যবহার করছেন।
এর আগে, বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে দেশটির ৯টি প্রদেশে। সে কারণেই দেখা দিয়েছে বন্যা। রাজধানীর সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। প্লাবিত হয়েছে পর্যটন নগরী হাত ইয়াইসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। কোমরসমান পানি ঢুকে পড়েছে শহরের প্রধান সড়ক, আবাসিক এলাকা ও বাজারে।
বন্যায় এরই মধ্যে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকার ও নৌবাহিনীর উদ্যোগে দেয়া হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা। তবে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার অভিযান। প্রায় ১৮ হাজার-এর বেশি মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে, বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে থাইল্যান্ডের প্রতিবেশী মালয়েশিয়ার ৮টি অঞ্চলেও। তবে দেশটিতে এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল থাকে। কিন্তু এবার মৌসুমের বাইরে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলে এ সপ্তাহজুড়ে আরও ভারী বর্ষণ এবং আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অনিয়মিত ও তীব্র আবহাওয়া দিন দিন বাড়ছে। যা সামনেও অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

