মিরপুরে চলছে বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট। যে ম্যাচে শততম টেস্ট খেলার মাইলফলক অর্জন করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটার মুশফিকুর রহিম।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মুশফিক। দীর্ঘসময় কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। উত্তর দেন নানা প্রশ্নের।
এক প্রশ্নর জবাবে মুশফিক বলেন, যে কোনো ক্রিকেটারের জন্যই ১০০ টেস্ট খেলা নিঃসন্দেহে গর্বের। একজন বাংলাদেশি হিসেবে সে ব্যক্তিটা আমি হতে পেরেছি, এটা ভালো লাগছে। আমার ওপর দায়িত্বও বেশি। আশা করবো, আর যে কয়টা ম্যাচ খেলতে পারি, তার যেন (অভিজ্ঞতার) প্রতিফলন থাকে মাঠে। আমি চলে যাওয়ার পরও যেন দু-একজন রেখে যেতে পারি, যেন গ্যাপটা পূর্ণ হয়।
একজন প্রশ্ন করেন, ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে মোটো কী? উত্তরে আবারও খোলামেলা মুশফিকের দেখা মেলে। বলেন, আমি একজন বোরিং পারসন। যতদিন খেলেছি, যতদিন খেলবো, প্র্যাকটিসে একই কাজ করেছি, করে যাবো। এছাড়া আমার করার কিছু নেই। আমি সফল হলাম নাকি বিফল, সেটা তো আমার হাতে নেই। আমার যা করার, আমি শুধু তাই করে যেতে পারি। সঙ্গে সততা-নিষ্ঠা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আর একটা কথা, প্রফেশনালিজমে আমার কাছে কোনো ছাড় নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ম্যাচের আগেই বলেছিলাম, যে মাইলস্টোনই হোক না কেন, দল সবার আগে। বাংলাদেশের জন্য আমি মুশফিকুর রহিম সমুদ্রের দুই-একটা ফোটা জলের মতো। আমার নামটা সম্পূর্ণ ডিফারেন্ট পার্ট। সবার আগে দেশ-আমাদের দল। এই মেসেজাই দেয়ার চেষ্টা করেছি, সবাই যেন আমার জন্য না, দেশের জন্য খেলি। এই ম্যাচে জয়টাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় গিফট হবে। এবং চেষ্টা করবো জিতে যেন সেলিব্রেট করতে পারি।
একটি প্রশ্নের উত্তরে মুশফিক স্ত্রীর অবদানের কথা উল্লেখ করেন। নিজের যৌথ পরিবারের কথা উল্লেখ করে বলেন, অনেক বড় বড় দায়িত্ব সে একাই সামলায়। আমাকে কোনো ঝামেলা মাথায় নিতে হয় না। আমার দুটো বাচ্চা। ওরা অনেক সময় রাতে ঘুমায় না। কিন্তু আমাকে একটা রাতও না ঘুমিয়ে কাটাতে হয়নি। বাচ্চাদের সবকিছুও ও একাই করছে। যদিও যে সময়গুলো গেছে, সেগুলো আর ফিরে পাবো না।
ক্যারিয়ারে টাফেস্ট মোমেন্ট কোনটা? এমন প্রশ্নে কিছুটা মজা করে উত্তর দেন মুশফিক। বলেন, বাংলাদেশের হয়ে পরের টেস্ট খেলাটাই সবচেয়ে টাফেস্ট। উত্তর শুনে হাসির রোল পড়ে সাংবাদিকদের মধ্যে। পরে বলেন, শুধু ব্যাটার হিসেবে খেলে যাওয়াটা আরও কঠিন। আর সুইট মেমোরি বলতে তিনি নিজের করা প্রথম ডাবল হান্ড্রেডের কথা উল্লেখ করেন।
আর কতদিন পর্যন্ত টেস্ট খেলা চালিয়ে যাবেন? এমন প্রশ্নে মুশফিক বলেন, টেস্টে ফিটনেস খুব জরুরি। সে জায়গা থেকে আমি ফিট আছি বলতে পারি। তারপরও কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। এরপর যতদিন টিম ম্যানেজমেন্ট চাইবে বা আমি মনে করবো আরও কিছু দিতে পারি, ততদিন খেলা চালিয়ে যাবো।

