spot_img

যে ছোট্ট আমলে আপনিও পেতে পারেন রাসুল (সা.)’র সুপারিশ

অবশ্যই পরুন

কিয়ামতের দিন আল্লাহর রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় পাওয়ার আশা কার নেই। সেই দিন কারো পক্ষেই কারও উপকার করা সম্ভব হবে না; আর প্রতিটি মুমিনের সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা হবে— রাসুলুল্লাহ (সা.) যেন তার জন্য সুপারিশ করেন। সৌভাগ্যের বিষয় হলো— মহানবী (সা.) নিজেই আমাদের এমন একটি সহজ আমল শিখিয়ে দিয়েছেন, যা করলে তার শাফাআত (সুপারিশ) আমাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে যাবে। এটি কোনো কঠিন আমল নয়— বরং প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত আজানের পর মাত্র কয়েক মুহূর্তের ছোট্ট একটি আমল। এই ছোট্ট আমলই এনে দেবে আখিরাতের বিশাল সৌভাগ্য। সে আমল হলো- আজানের পর তার প্রতি দরূদ পাঠ করা এবং তার জন্য ‘ওসিলা’ কামনা করা।

আসুন, সেই মহামূল্যবান আমলটি নতুন করে বুঝে নিই, হৃদয়ে ধারণ করি এবং জীবনভর তা পালন করি-

اَللّٰهُمَّ رَبَّ هٰذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ.

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ দা’ওয়াতিত তাম্মাহ, ওয়াসসালাতিল কায়িমাহ, আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ, ওয়াব্আছহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়াআ’দ্তাহ।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! এ পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের তুমিই প্রভু! তুমি মুহাম্মাদকে (সা.) দান কর ওসিলা; সুমহান মর্যাদা ও তাকে (মাক্বামে মাহমুদ) প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও, যার ওয়াদা তুমি তাকে দিয়েছ।’

হাদিসের বর্ণনায় বিষয়টি এভাবে ওঠে এসেছে-

হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন-

إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَيَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لَا تَنْبَغِي إِلَّا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ عَلَيْهِ الشَّفَاعَةُ

‘তোমরা মুয়াজ্জিনের আজান শুনলে উত্তরে সে শব্দগুলোরই পুনরাবৃত্তি করবে। আজান শেষে আমার ওপর দরুদ পাঠ করবে। কারণ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে (এর পরিবর্তে) আল্লাহ তার ওপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। এরপর আমার জন্য আল্লাহর কাছে ‘ওসিলা’ প্রার্থনা করবে। ‘ওয়াসিলা’ হলো জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুধু একজন পাবেন। আর আমার আশা এ বান্দা আমিই হব। তাই যে ব্যক্তি আমার জন্য ‘ওসিলা’র দোয়া করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য সুপারিশ করা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে পড়বে।’ (মুসলিম ৩৮৪, আবু দাউদ ৫২৩, নাসাঈ ৬৭৮, তিরমিজি ৩৬১৪, ইবনু হিব্বান ১৬৯০, ইরওয়া ২৪২, আল জামি‘ ৬১৩)

সুতরাং আজানের পর করণীয় তিনটি সুন্নাহ-

১. মুয়াজ্জিনের কথার অনুরূপ বলা

২. নবীজি (সা.)-এর উপর দরুদ পাঠ করা

৩. নবীজি (সা.)-এর জন্য ‘ওসিলা’ কামনায় আজানের পর উপরোল্লিখিত দোয়া পড়া

আজানের পরের এই ছোট দোয়াটি শুধু শব্দ নয়— এটি হলো আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, এটি হলো জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থানের জন্য তার প্রতি শুভকামনা এবং একই সঙ্গে আমাদের নিজেদের জন্য আখিরাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এক অপূর্ব আমল। কিয়ামতের ভয়াবহ দিনে যখন প্রত্যেকে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে— ঠিক তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) যদি বলেন, ‘এই আমার উম্মত… এই আমার সুপারিশের অধিকারী’— এর চেয়ে বড় অর্জন আর কী হতে পারে? তাই আজানের পরের মুহূর্তটিকে কখনো মূল্যহীন মনে করবো না। কারণ কয়েক সেকেন্ডের দোয়া ও আমল আপনার আখিরাতের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। তাই প্রতিবার আজানের পর ওসিলার দোয়া পড়া আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠুক। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নবীজি (সা.)-এর সুপারিশের যোগ্য বানান। আমিন।

সর্বশেষ সংবাদ

যুদ্ধবিরতির মধ্যই গাজায় ইসরায়েলি হামলা, একদিনেই নিহত ২৭

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বুধবার (১৯ নভেম্বর) ২৭ জন নিহত হয়েছে। উপত্যকার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। ইসরাইল ও হামাস...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ