spot_img

মেক্সিকোতে সামরিক অভিযান চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

অবশ্যই পরুন

লাতিন আমেরিকার মাদক কার্টেলবিরোধী সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের সাফল্যের পর তা মেক্সিকোতেও সম্প্রসারণ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

ট্রাম্প বলেছেন, মাদক বন্ধের জন্য আমি কি মেক্সিকোতে সামরিক অভিযান শুরু করব? আমার ক্ষেত্রে এটা ঠিক আছে। আমি মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনা করছি। তারা জানে আমি কেমন অবস্থানে আছি।

তিনি আরও বলেন, মাদকের কারণে আমাদের দেশে প্রতি বছর কয়েক লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আমরা সমুদ্রপথে মাদক সরবরাহ বন্ধ করেছি, তবে মাদক কার্টেলগুলোর প্রতিটি পথ আমরা জানি।

যদিও এই হামলা কবে এবং কীভাবে হতে পারে— সে বিষয়ে কিছু বলেননি ট্রাম্প। এর আগে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লউদিয়া শেইনবাম তার দেশের মাটিতে যেকোনো ধরনের মার্কিন সামরিক হামলার তীব্র বিরোধিতা করেছেন।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাতিন আমেরিকান স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক জেফ গারমানি বলেন, মেক্সিকো সিটির বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে বেশ কিছু আইনি বাধা রয়েছে— যার কিছু অভ্যন্তরীণ এবং কিছু আন্তর্জাতিক। এছাড়া আন্তর্জাতিক কূটনীতির মৌলিক নীতিমালাও রয়েছে, যা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক না হলেও জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সাধারণত মেনে চলে।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প এসব আইন বা প্রোটোকল মেনে চলবেন— তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তাই আলোচনা ছাড়া তিনি হামলা শুরু করলেও আমি অবাক হবো না।

দুই সপ্তাহ আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি দু’জন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, হোয়াইট হাউস মেক্সিকোতে একটি স্থল অভিযানের প্রাথমিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে চালানো হবে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযানটি মাদক গুদাম ও কার্টেল সদস্যদের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলার ওপর কেন্দ্রিত থাকবে।

সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই লক্ষ্যবস্তুর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে। তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি পথ জানি। আমরা প্রতিটি মাদক সম্রাটের ঠিকানা জানি। তাদের সদর দরজা পর্যন্ত জানি। তাদের সম্পর্কে আমরা সবকিছু জানি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘যুদ্ধের মতো’ বলে উল্লেখ করে বলেন, কোকেন, হেরোইন, মেথামফেটামিন এবং ফেন্টানাইল সরবরাহের মাধ্যমে মাদক কার্টেলগুলো লাখ লাখ আমেরিকানকে ‘হত্যা’ করছে।

গারমানি বলেন, মেক্সিকোতে মাদক কার্টেলগুলোর শক্তির কারণে মার্কিন হামলার প্রভাব খুব কম হতে পারে। ২০ বছর আগে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণার পর মেক্সিকান সরকার নিজেই দীর্ঘস্থায়ী ও মারাত্মক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।

তিনি আরও যোগ করেন, মেক্সিকোর কার্টেলগুলো বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও সংগঠিত অপরাধী গোষ্ঠী। বিপুল সম্পদ ও ভৌগোলিক সুবিধা তাদের শক্তি আরও বাড়িয়েছে। লক্ষ্যবস্তু সামরিক হামলা জনসংযোগে প্রভাব ফেললেও বিশ্বের সবচেয়ে লাভজনক অবৈধ মাদক সরবরাহ চেইনকে থামাতে পারবে না।

জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই মাদক কার্টেলবিরোধী সামরিক পদক্ষেপ ন্যায্যতা দিতে নির্বাহী আদেশ ও আইনি ফাঁকফোকর ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ছয়টি মাদক কার্টেলকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণার উদ্যোগ, যা হোয়াইট হাউসকে জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তিতে সামরিক হামলার অনুমোদন দিতে পারে।

সেপ্টেম্বর থেকে হোয়াইট হাউস ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরে কথিত মাদকবাহী নৌযানে কমপক্ষে ২০টি হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৮০ জন। যদিও ভেনেজুয়েলা সরকারের বিরুদ্ধে মাদক কার্টেলের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র এখনও কোনো প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

সূত্র: রয়টার্সএনবিসি নিউজআল-জাজিরা

সর্বশেষ সংবাদ

বিতর্কিত মন্তব্যের পর ভারতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তোপের মুখে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট

অভিবাসীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা এক পোস্টে তিনি...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ