ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করেছেন, রাজধানী তেহরান ভয়াবহ পানি সংকটে পড়তে পারে এবং আগামী দিনগুলোতে বৃষ্টিপাত না হলে শহরটি খালি করতেও হতে পারে।
বৃহস্পতিবার পশ্চিম ইরানের সানানদাজ সফরে তিনি বলেন, “আমরা একসঙ্গে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও সামাজিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছি।”
দৈনিক ইতেমাদ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেজেশকিয়ান মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির জন্য দেশীয় নীতি ব্যর্থতা এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, “উচ্চমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি সংসদ ও সরকারের উভয়ের ব্যর্থতার ফল। নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সীমিত অর্থনৈতিক সম্পদের কারণে অনেক প্রকল্প অসমাপ্ত থেকে যাচ্ছে।”
পানি সংকটের বিষয়ে তিনি জানান, ইরান ভয়াবহ প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন—বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ও পানির উৎস ক্রমেই কমছে।
প্রেসিডেন্টের ভাষায়, “যদি শিগগির বৃষ্টি না হয়, আগামী মাস থেকে তেহরানে পানি সরবরাহ সীমিত করতে হবে। খরা অব্যাহত থাকলে আমাদের কাছে কোনো পানি থাকবে না, এমনকি শহর খালি করতে বাধ্য হতে পারি।”
পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেন, পানি ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে। তিনি তেহরানের অবস্থা “উদ্বেগজনক” বলে উল্লেখ করেন।
তেহরানের পানি পরিস্থিতি
তেহরানের পানির প্রধান উৎস পাঁচটি বাঁধ—লার, মামলু, আমির কাবির, তালেকান ও লাতিয়ান। এর মধ্যে আমির কাবির সবচেয়ে বড়। কিন্তু গত পাঁচ বছরে ইরানে বৃষ্টিপাত নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে তেহরানে গড় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ কম।
বৃষ্টির অভাবে জলাধারগুলোতে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে গেছে, যা ভূগর্ভস্থ পানির মজুদেও প্রভাব ফেলছে।
তেহরান ওয়াটার অথরিটি জানিয়েছে, দীর্ঘ খরার কারণে রাজধানীর জলাধারগুলো শত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। ইতোমধ্যে গ্রীষ্মে মাঝে মাঝে পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর সংস্থার প্রধান বেহজাদ পারসা সতর্ক করে বলেন, “শুষ্ক আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে বাঁধের পানি আর দুই সপ্তাহের বেশি তেহরানকে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।”
এর আগেও, ২৩ জুলাই প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেছিলেন, “যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে শিগগিরই জনগণকে পানি সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।”

