যুদ্ধবিরতির এক বছর পরও লেবাননে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ফলে দেশটির সীমান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে আসা অনেকেই এখনও ফিরতে পারেনি নিজের বসতভিটায়। গেল বছর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল লেবাননের বাসিন্দারা। কিন্তু বাস্তবে ফেরেনি শান্তি; তাই বাড়ি ফেরা নিয়ে সংশয়ে বহু লেবানিজ।
যুদ্ধবিরতির পর হিজবুল্লাহ হামলা বন্ধ করলেও এখনও প্রায়ই অনেকটা নিয়ম করে লেবাননে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। তাই দেশটির দক্ষিণের ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরগুলিতে এখনও ফেরেনি কয়েক হাজার বাসিন্দা।
এই যুদ্ধে লেবাননের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী শহর নাকোরার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন লাখ লাখ মানুষ। ৫০ বছর বয়সী জয়নাব মেহেদি তাদের মধ্যে একজন। তাদের ঘরবাড়ি সব ধ্বংস হয়েছে, একমাত্র জীবিকার উপায় কৃষিজমিও বোমা হামলায় ক্ষতবিক্ষত। তিনি বলেন, যেসব বাড়ি যুদ্ধের পরও দাঁড়িয়ে ছিল বা জমি ভাল অবস্থায় ছিল, তারা সব ধ্বংস করে দিয়েছে। এমনকি মাটি থেকে পানির পাম্প তুলে ধ্বংস করেছে। আমার যত সেচ পাম্প ছিল তা নষ্ট হয়েছে। আমার আর কিছুই নেই।
এখন উপকূলীয় শহর টায়ারে জাতিসংঘের মহিলা সংস্থার অর্থায়নে একটি কৃষি প্রকল্পে কাজ করেন জয়নাবের মতো অনেকেই। এখানেই কমিউনিটি কিচেন চালান আরেক লেবানিজ নারী, মুনিফা আইদিবেহ। বাস্তুচ্যুতদের জন্য প্রতিদিন খাবার তৈরি করা এখন তার পেশা।
আরেকজন বলেন, যুদ্ধ শেষ হয়নি। আমরা এখনও যুদ্ধের মধ্যেই বাস করছি। যুদ্ধ তখনই শেষ হবে যখন ইসরায়েল লেবানন ছেড়ে যাবে। আকাশে থাকবে না কোনো ড্রোন; তারা প্রতিদিনই আর কোনো বাড়িতে হামলা করবে না।
মূলত, লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সামরিক ঘাঁটি পুনঃপ্রতিষ্ঠার অভিযোগ এনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তেলআবিব। অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটির মতে, বেসামরিক নাগরিকদের বাড়ি ফেরা বন্ধ করতেই এই অঞ্চলে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, লেবাননে ৬৪ হাজারেও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে দিনযাপন করছে; এদের মধ্যেই হাজারখানেক মানুষ নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে এসেছে এই অক্টোবরেই।

