পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ কড়া ভাষায় সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইসলামাবাদ আর আগের মতো কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে না। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরপরই তিনি এই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের উৎপত্তিস্থল থেকে কড়া মূল্য আদায় করার হুমকি দিয়েছেন।
খাজা আসিফ তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সরাসরি বলেন, পাকিস্তান আর অতীতের মতো কাবুলের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে না।
মন্ত্রী স্পষ্ট জানান, পাকিস্তানের মাটিতে বসবাসকারী সকল আফগানকে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের জমি এবং সম্পদ ২৫ কোটি পাকিস্তানির জন্য।
আসিফ দাবি করেন, গত পাঁচ বছরে পাকিস্তান ৮৩৬টি প্রতিবাদ নোট এবং ১৩টি ডিমার্চ (কূটনৈতিক প্রতিবাদপত্র) জারি করা সত্ত্বেও কাবুল খুব কম ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। এখন থেকে আর কোনো প্রতিবাদপত্র বা শান্তির আবেদন থাকবে না, কোনো প্রতিনিধি দল কাবুলে যাবে না।
তিনি সতর্ক করে বলেন, সন্ত্রাসবাদের উৎস যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে চরম মূল্য দিতে হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আরও অভিযোগ করেন, আফগানিস্তান এখন ‘ভারতের প্রক্সি’ হয়ে উঠেছে এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে মিলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, কাবুলের শাসকরা, যারা এখন ভারতের কোলে বসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা একসময় আমাদের সুরক্ষায় ছিল। আমাদের ভূমিতে লুকিয়ে ছিল।’ তবে তিনি তাঁর এই দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেননি।
আসিফ জানান, পাকিস্তান আরও আগ্রাসনের ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। বুধবার তিনি বলেন, আফগান তালেবানরা যদি সংঘাত চায় তবে পাকিস্তান তাদের যুদ্ধের ইচ্ছা পূরণ করতে প্রস্তুত।
আসিফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানে ১০ হাজার ৩৪৭টি সন্ত্রাসী হামলায় বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা কর্মীসহ ৩ হাজার ৮৪৪ জন নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) আফগানিস্তানের অনুরোধে পাকিস্তান ও তালেবান সরকার ৪৮ ঘণ্টার জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল।
এদিকে, গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা কাতারের দোহায় একটি সমাধান নিয়ে আলোচনা করার জন্য বৈঠকে বসতে চলেছেন, তাই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র- ইন্ডিয়া টুডে