বিশ্বখ্যাত ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসনের (জে অ্যান্ড জে) বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে মামলা করেছেন হাজারো মানুষ। অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাসবেস্টস-দূষিত বেবি পাউডার বাজারজাত করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রায় তিন হাজার মানুষ এই মামলায় অংশ নিয়েছেন। মামলার পক্ষে উপস্থাপন করা হয়েছে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নথি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যা বিবিসির হাতে এসেছে।
অভিযোগে বলা হয়, ১৯৬০-এর দশক থেকেই জে অ্যান্ড জে জানত যে তাদের ট্যালকম পাউডারে রয়েছে ট্রেমোলাইট ও অ্যাকটিনোলাইট জাতীয় ফাইবারযুক্ত খনিজ উপাদান। এই উপাদানগুলো ফাইবার রূপে থাকলে তা অ্যাসবেস্টসে পরিণত হয়, যা বৈজ্ঞানিকভাবে ক্যানসারের জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত।
আদালতের নথিতে আরও বলা হয়েছে, বিষয়টি জানার পরও জনসন অ্যান্ড জনসন কখনোই তাদের পণ্যের মোড়কে সতর্কবার্তা যুক্ত করেনি। বরং বেবি পাউডারটিকে “বিশুদ্ধতা ও নিরাপত্তার প্রতীক” হিসেবে উপস্থাপন করে নিয়মিত প্রচার চালিয়েছে কোম্পানিটি।
যদিও জনসন অ্যান্ড জনসন সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, তাদের বেবি পাউডার আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারিত সব মানদণ্ড মেনে তৈরি করা হয় এবং এতে অ্যাসবেস্টস নেই। সেই সঙ্গে এটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী নয় বলেও দাবি করে প্রতিষ্ঠানটি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে ২০২৩ সালেই ট্যালকম বেবি পাউডারের বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কিন্তু যুক্তরাজ্যে মামলার আগেই যুক্তরাষ্ট্রে জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে একই ধরনের বহু মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই ইতোমধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। যদিও কিছু মামলায় কোম্পানিটি আপিল করে রায় বদলাতে সক্ষম হয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাজ্যের বাদীপক্ষের আইনজীবীরা মনে করছেন, এবার দেশটির আদালতে মামলাটি প্রমাণিত হলে জনসন অ্যান্ড জনসনকে শত শত মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।