মাছের বাজারে অস্বস্তি যেন আরও বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় যোগান নেমেছে তলানিতে। বিল ও চাষের মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এদিকে, সবজির দর কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও স্বস্তির পরিবেশ তৈরি করেনি। দেখা মিলছে আগামী শীতকালীন সবজির।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
মূলত, ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত সাগর এবং নদ-নদীর বিভিন্ন এলাকায় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায়, আহরণ কমেছে। সামুদ্রিক মাছের যোগান নেই বললেই চলে। খাল-বিল আর চাষের মাছই এখন ভরসা।
বিক্রেতাদের দাবি, এসব মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। মাাঝারি আকারে চাষের রুই-কাতলার জন্য গুণতে হবে চারশো থেকে সাড় চারশো টাকা কেজি।
এক কেজি চিংড়ির দাম হাকা হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত। এমন লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধির জন্য, মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সীমিত আয়ের ক্রেতারা।
মাছ কিনতে আসা একজন বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণে মাছ খাওয়ার পরিমাণ হয়ত কমিয়ে দিতে হতে পারে। কারণ, যারা মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবী তাদের বেতন তো বাড়ছে না। আরেকজন বলেন, দাম বেশ চড়া। বাজার ঘুরে পছন্দের মাছ কেনা বেশ দুরূহ হয়ে পড়েছে।
বিক্রেতারা জানান, মাছের জোগান কম এবং আনুসঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়াতেই দাম কিছুটা বাড়তি।
মাংসের বাজারে দামের তেমন পরিবর্তন নেই। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি সোনালি কক মুরগি ৩০০–৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের বাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে; ডজনপ্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়।
চালের বাজারে সামান্য পরিবর্তন দেখা গেলেও তা এখনও স্থিতিশীল। মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৮–৮০ টাকা এবং পোলাও চাল ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, মুগ ডাল ১৬০ টাকা, খেসারি ১০০ টাকা এবং বুটের ডাল ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের মধ্যে প্রতি কেজি ডায়মন্ড, মঞ্জুর ও সাগর ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা, রশিদ ৭২ টাকা ও মোজাম্মেল মিনিকেট ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে, গত সপ্তাহের চড়া মূল্য থেকে সামান্য কমেছে সবজির দাম। তবে, এখনও তা স্বস্তির পর্যায়ে আসেনি। মানভেদে কিছু সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমলেও, বেশিরভাগ সবজির দাম তুলনামূলক বেশি।
কেজিতে ১শ’ টাকা কমে কাঁচামরিচ মিলছে ২শ’ টাকায়। এক কেজি গোল বেগুণের জন্য পকেট থেকে যাবে ১৮০ টাকা।
গত সপ্তাহে শতকের ঘরে থাকা করলা, পটল, ঢেঁড়স সহ বেশকিছু সব্জি মিলছে ৮০ টাকা কেজিতে। একই দামে মিলছে ফুলকপি, বাধাকপির মত আগাম শীতকালীন সবজি।
মসলার বাজারে মিশ্র চিত্র দেখা গেছে। কিসমিস কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, আলুবোখারা ৭০০ টাকা, এলাচ ৪৮০০–৫২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৭০০–১৮০০ টাকা, জিরা ৭০০ টাকা এবং গোলমরিচ ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
৮০ টাকা কেজিতে অপরিবর্তিত আছে পেঁয়াজের বাজার। তবে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে আমদানি করা রসুন আর আদার। এক কেজি রসুন কিনতে হলে দিতে হবে ১৮০ টাকা। আর আদার জন্য জন্য গুণতে হবে ২২০ টাকা।