সদ্য সমাপ্ত এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে ভারত। দুবাইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেও এখনও শিরোপা হাতে পায়নি সূর্যকুমার যাদবের দল। কারণ ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ছিলেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধান মহসিন নাকভি; যার হাত থেকে শিরোপা নিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত।
এই ঘটনার পেছনে অবশ্য রয়েছে ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তেজনা। গত এপ্রিলে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ ভারতীয় পর্যটক নিহতের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। এশিয়া কাপের সময়ও এই প্রতিক্রিয়া ফুটে ওঠে, যেখানে ভারতীয় ক্রিকেটাররা পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকার করে এবং ফাইনালে জয় সত্ত্বেও নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে রাজি হয়নি।
কিন্তু নাকভি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, ফলে শিরোপা না নিয়েই দেশে ফেরে ভারত। পরে নকভি নিজেই ট্রফি নিজের কাছে রেখে দেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ভারতীয় দল চাইলে অফিসিয়াল ভাবে এসিসির প্রধান কার্যালয়ে তার কাছ থেকে ট্রফি নিতে পারে। নাকভি আরও বলেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি এবং বিসিসিআই’র কাছে ক্ষমা চাইব না।’
তার এই দৃঢ় অবস্থান পাকিস্তানে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে এবং অনেকেই এটিকে জাতীয় মর্যাদা ও সাহসের প্রতীক মনে করছেন। তাই এমন কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে নাকভিকে। ‘শহীদ জুলফিকার আলি ভুট্টো এক্সিলেন্স গোল্ড মেডেল’ পাচ্ছেন তিনি। মূলত নৈতিক ও সাহসী পদক্ষেপের জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে তাকে। পাকিস্তানের দৈনিক দ্য নেশন-এর প্রতিবেদনে এমনটায় জানায়।
পাকিস্তানের সিন্ধ ও করাচি বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অ্যাডভোকেট গুলাম আব্বাস জামাল নাকভিকে এই সম্মাননা জানানোর ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ভারতের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক ও ক্রীড়াগত উত্তেজনার মাঝে তার পদক্ষেপ দেশের মর্যাদা রক্ষা করেছে। এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানায়, যা রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে দেখা হয়।
গুলাম আব্বাস জামাল মনে করেন এটা শুধু ক্রিকেটীয় ব্যাপার নয়, এর সঙ্গে পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদার সম্পর্ক আছে। তিনি বলেন, ‘এটা শুধু ক্রিকেটের ব্যাপার নয়। এটা মর্যাদা, সার্বভৌমত্ব ও চাপের কাছে মাথা নত না করার ব্যাপার।’
নাকভিকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই সিন্ধ বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান খালিদ জামিল শামসির নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। করাচিতে জমকালো আয়োজনে নাকভিকে এই স্বর্ণপদক দেওয়া হবে। যেখানে পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে কবে দেওয়া হবে সেই তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।