গাজা যুদ্ধ অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় কিছু ইস্যু এখনও স্পষ্ট নয় এবং সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার বলে মন্তব্য করেছে কাতার।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দোহার আল জাজিরা টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার বরাত এ খবর জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি বলেন, ‘আমরা আশা করি, সবাই এই পরিকল্পনাটিকে গঠনমূলকভাবে দেখবে এবং যুদ্ধের অবসানের এই সুযোগটি কাজে লাগাবে।’
তিনি জানান, দোহা এখনো ট্রাম্পের পরিকল্পনা নিয়ে হামাসের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পায়নি।
তিনি আরও জানান, ‘আমরা এখনও জানি না হামাস কী ভাবছে। এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের জন্য ফিলিস্তিনের বিভিন্ন দলের ঐকমত্য প্রয়োজন।’
কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানান, সোমবার কায়রো ও দোহায় হামাসের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশর স্পষ্ট করে জানিয়েছে—তাদের মূল লক্ষ্য হলো যুদ্ধের অবসান ঘটানো।
শেখ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো গাজায় মানুষের দুর্ভোগ, দুর্ভিক্ষ, হত্যা ও বাস্তুচ্যুতির অবসান।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিকল্পনায় উপস্থাপিত বিষয়গুলো মূলত প্রাথমিক নীতিমালা, যেগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়নের পথ নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।’
কাতারের প্রধানমন্ত্রী জানান, আরব ও ইসলামি দেশগুলো যৌথভাবে কাজ করছে যেন ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ভূমিতে টিকে থাকতে পারে এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়িত হয়।
সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে ট্রাম্প তার ২০ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এতে রয়েছে:
– সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে বহু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি
– হামাসের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ
– ধাপে ধাপে ইসরায়েলি বাহিনীর গাজা থেকে প্রত্যাহার
– গাজা শাসনে একটি নির্দলীয় ও প্রযুক্তিগত (টেকনোক্র্যাট) ফিলিস্তিনি কমিটি গঠন
– সম্ভাব্য (কিন্তু নিশ্চয়তাহীন) পথ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র গঠনের ইঙ্গিত
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় গাজা প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ভিক্ষ, রোগবালাই ও চরম মানবিক সংকট।