দেশের কৃষি খাতে সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে চীন, সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে মোট ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই আমদানিতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৭১৪ কোটি ৫১ লাখ ৯১ হাজার ৪৮০ টাকা।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই বৃহৎ আকারের সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় চীনের ব্যানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব নিয়ে আসে কৃষি মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে চীন থেকে নবায়িত চুক্তির আওতায় ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়। আগের চুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় বিদ্যমান শর্ত অপরিবর্তিত রেখে গত ১০ জানুয়ারি চুক্তি নবায়ন করা হয়।
এ চুক্তি অনুযায়ী, ৪০ হাজার টন ডিএপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারদরে ৩ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩৭৮ কোটি ৮৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রতি টন ডিএপি সারের দাম ধরা হয়েছে ৭৭২ দশমিক ৫০ ডলার।
একই বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৫ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০ টাকা। মরক্কোর সঙ্গে করা নবায়িত চুক্তির আওতায় এ টিএসপি সার আনা হবে।
পূর্বের কার্যক্রম শেষ হওয়ায় ২ জুলাই পুনরায় চুক্তি নবায়ন করা হয়। শর্ত অনুযায়ী ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আন্তর্জাতিক বাজারদরে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার ৯০০ ডলারে আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২১৫ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০ টাকা। প্রতি টনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮৫ দশমিক ৩৩ ডলার।
এছাড়া মরক্কোর একই প্রতিষ্ঠান থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আরও ৪০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির আরেকটি প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এর ব্যয়ও একই হারে ধরা হয়েছে।
পাশাপাশি মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে। এর জন্য খরচ হবে ৩ কোটি ৪ লাখ ১৩ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৭২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৮ হাজার ৩২০ টাকা। প্রতি টনের দাম ধরা হয়েছে ৭৬০ দশমিক ৩৩ ডলার।
সব মিলিয়ে চীন, সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে মোট ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন সার আনতে সরকারের ব্যয় হবে ১ হাজার ৭১৪ কোটি টাকার বেশি।
এই আমদানির মাধ্যমে দেশের কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় সারের মজুত নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।