spot_img

আদুরে কিছু দেখলে আমাদের আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া হয় কেন?

অবশ্যই পরুন

অনেক বেশি মায়াবী কিছু দেখলে আবেগপূর্ণ ভঙ্গিতে তা প্রকাশের প্রবণতা আসলে এক ধরনের জটিল প্রতিক্রিয়া। মনোবিজ্ঞানীরা একে বলেন ডাইমরফাস ইমোশনাল এক্সপ্রেশন- যেখানে আমাদের বাহ্যিক আবেগের প্রকাশ ভেতরে বোধ করা অনুভূতির সঙ্গে মেলে না।

এটি অদ্ভুত মনে হলেও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, এই প্রবণতা সব বয়স ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান।

আদুরে কিছু দেখলে আমাদের মস্তিষ্কে কী ঘটে?
আদুরে বা মায়াবী কিছু দেখলে আমাদের মস্তিষ্ক থেকে ডোপামিন নামের এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যাকে “ভালো বোধ” বা পুরস্কার হরমোন বলা হয়ে থাকে। সুস্বাদু খাবার খাওয়া, প্রেমে পড়া কিংবা কোনো লক্ষ্য অর্জনের পরও নিঃসৃত হয় এই হরমোন।

এই ইতিবাচক অনুভূতিগুলো কখনো কখনো মস্তিষ্ককে এতটাই আচ্ছন্ন করে যার কারণে সক্রিয় হয়ে ওঠে আবেগ-নিয়ন্ত্রক অংশ—অ্যামিগডালা। অ্যামিগডালা দ্রুত আবেগের ব্রেক কষে দেয়, যাতে আমরা ভেতরের আবেগকে বাস্তবে আচরণে রূপ না দিই।

শ্রীলঙ্কার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ড. কান্থি হেট্টিগোডা বলেন: “রিওয়ার্ড সিস্টেম বা পুরস্কার প্রক্রিয়া যখন সক্রিয় হয়, তখন আমাদের ভেতরে চেপে ধরা, টিপে ধরা, কামড়ানো বা ভেঙে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়।”

কিন্তু একই সঙ্গে সক্রিয় হয় আবেগ নিয়ন্ত্রণের অংশ, ফলে আমরা আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করি। এখানে সেটাই ঘটছে। এই টানাপোড়েনের প্রক্রিয়াই এই বোধ তৈরি করে যাকে আমরা বলি কিউট অ্যাগ্রেশন।

কিউট অ্যাগ্রেশন কি ক্ষতিকর?
গবেষকদের মতে, কিউট অ্যাগ্রেশন আসলে তীব্র আবেগ ও অনুভূতি বের করার এক স্বাস্থ্যকর উপায়। এটি আমাদের নিরাপদে অতিরিক্ত ইতিবাচক আবেগ সামলাতে সাহায্য করে। এটি এও দেখায় যে মস্তিষ্ক একই সময়ে পরস্পর বিরোধপূর্ণ আবেগ সামলাতে সক্ষম।

মনোবিজ্ঞানীরা একে এমন এক ধরনের টিকে থাকার উপায় হিসেবে দেখেন, যা আমাদের তীব্র ইতিবাচক আবেগকে নিরাপদ ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য উপায়ে প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা করে। তবে সমস্যা দেখা দিতে পারে যখন মানুষ সাধারণভাবে তাদের আবেগপ্রবণ তাড়না নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. কপিলা রানাসিংহে বলেন: “যেকোনো প্রবল তাড়নায়— তা মায়ার হোক, রাগের হোক বা আকাঙ্ক্ষার— তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানো বিপজ্জনক। আমাদের এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে।

সবাই কি কিউট অ্যাগ্রেশন অনুভব করে?
বেশিরভাগ (মনোবিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ) মানুষ কিউট অ্যাগ্রেশন অনুভব করলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ তা করেন না। এর মানে এই নয় যে তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা আছে।

এখনও মনোবিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন—যারা কিউট অ্যাগ্রেশন অনুভব করেন না, তাদের তীব্র আবেগের অভিজ্ঞতা কি তুলনামূলক কম, নাকি তারা নিজেদের প্রকাশ করার ভিন্ন কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ সংবাদ

‘পিআর নাকি বিদ্যমান পদ্ধতিতে ভোট— সিদ্ধান্ত নেবে দলগুলোই’

পিআর নাকি বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচন— এর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোই নেবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ