ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি প্রদান মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়া বাঁচিয়ে রাখতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী লুক ফ্রাইডেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের এক শীর্ষ সম্মেলনে তার দেশ এ স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ইতিমধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে জি-৭ অর্থনৈতিক জোটের কোনো দেশ এখনো এ স্বীকৃতি দেয়নি। এবার সেই জোটের কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ—অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং লুক্সেমবার্গ—নিউইয়র্কে ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সম্মেলনে এই স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ফ্রাইডেন বলেন, ‘আমি চাই, ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি জনগণ শান্তির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখুক। এই স্বীকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে দীর্ঘ যাত্রার পথে একটি বড় পদক্ষেপ।’
আগামী সোমবার শুরু হওয়া সম্মেলনে সৌদি আরব এবং ফ্রান্স ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের জন্য দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিয়ে বৈঠকে সহ-সভাপতিত্ব করবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৪ হাজার ৯৬৪ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ এই তথ্যকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। চলমান মানবিক সংকট এবং সহায়তা প্রবেশে বাধা ইউরোপসহ অন্যান্য অঞ্চলে জনমনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে ইসরায়েলকে ‘গণহত্যা’ সংঘটনের অভিযোগ তোলা হয়েছে, যদিও ইসরায়েল তা অস্বীকার করেছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় একটি প্রস্তাব পাস হয়, যা ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করে।
লুক ফ্রাইডেন বলেন, ‘আমরা সোমবার দেখব আরব দেশগুলো কী বলে। তারা যে হামাসকে নিন্দা করছে, সেটাই একটি নতুন দিক। হামাসকে যেতে হবে এবং আরব দেশগুলোকে আমাদের সহায়তা করতে হবে।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অবশ্য বলছেন, ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কোনোভাবেই হবে না।’ তার সরকারের মতে, এ ধরনের স্বীকৃতি মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করবে এবং হামাসকে পুরস্কৃত করার শামিল।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রধান মিত্র এ স্বীকৃতির বিরোধিতা করেছে এবং ফিলিস্তিন প্রতিনিধি দলের ভিসাও বাতিল করেছে।
ফ্রাইডেন বলেন, ‘আমরা যা করছি তা ইসরায়েলি জনগণের বিরুদ্ধে নয়, বরং গাজায় চলমান নৃশংসতা বন্ধের উদ্দেশ্যে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা আমাদের কথা না শোনে, তাহলে দুঃখজনকভাবে আমাদের নিষেধাজ্ঞার দিকে যেতে হবে।’
সূত্র: আল-আরাবিয়া