নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংস বিক্ষোভ ক্রমেই চরমে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দায়িত্ব ছাড়ার পরপরই নেপাল সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে চড়ে রাজধানী কাঠমান্ডু ছেড়ে যান তিনি। বর্তমানে দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে ক্ষমতা ছাড়ার পর ওলি কোথায় গেছেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনো প্রকাশ হয়নি। তিনি দেশে আছেন নাকি বিদেশে গেছেন তাও স্পষ্ট নয়।
তার প্রস্থানের সময়কার ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানে দেখা গেছে, অলির সরকারি বাসভবন আগুনে জ্বলছে এবং উপরে চক্কর দিচ্ছে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধম এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা চারবারের প্রধানমন্ত্রী ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ৭৩ বছর বয়সী কেপি শর্মা ওলির বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে ওলি পদত্যাগ করেন, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথ সুগম হয়। তবে তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস রূপ নেয় দেশটিতে। এক পর্যায়ে সরকারি দমন-পীড়নে অন্তত ১৯ জন নিহত হন এবং বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন।
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। ক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন সরকারি ভবন, রাজনীতিবিদদের বাসভবন, সুপারমার্কেটসহ বহু স্থাপনায় আগুন দেয়।
কাঠমান্ডুতে এখনো ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যাচ্ছে। রাস্তায় পুড়ে যাওয়া গাড়ি ও টায়ারের অবশিষ্টাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
সেনাবাহিনী সতর্ক করে বলেছে, যে কোনো কর্মকাণ্ড যা দেশকে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিতে পারে, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। ৩ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার হিমালয়কেন্দ্রিক এ দেশটিতে হঠাৎ এই সহিংসতা বহু মানুষকে হতবাক করেছে।
একজন সেনাসদস্য বলেন, আজ শহর অনেকটাই শান্ত, সব জায়গায় সেনা মোতায়েন রয়েছে। তবে তিনি গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ করেননি।