spot_img

যেসব কাজে বিপদ অবধারিত

অবশ্যই পরুন

কিছু অভ্যাস এমন আছে, যেগুলো মানুষের ইহাকালীন সুখ যেমন কেড়ে নেয়, পরকালীন সফলতায়ও ব্যাঘাত ঘটায়। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত, জীবনে চলার পথে এ ধরনের অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা। নিম্নে এমন কয়েকটি কাজ হাদিসের আলোকে তুলে ধরা হলো, যেগুলো করলে মুমিনের বিপদে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মত যখন পনেরটি বিষয়ে লিপ্ত হয়ে পড়বে তখন তাদের উপর বিপদ-মুসিবত এসে পড়বে। প্রশ্ন করা হলো ইয়া রাসুলাল্লাহ! সেগুলো কী কী? তিনি বলেন, যখন গনীমতের মাল ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানাত লুটের মালে পরিণত হবে, জাকাত জরিমানা রূপে গণ্য হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের অবাধ্য হবে, বন্ধুর সাথে ভাল ব্যবহার করবে কিন্তু পিতার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে, মসজিদে শোরগোল করা হবে, সবচাইতে খারাপ চরিত্রের লোক হবে তার সম্প্রদায়ের নেতা, কোন লোককে তার অনিষ্টতার ভয়ে সম্মান করা হবে, মদ পান করা হবে, রেশমী বস্ত্র পরিধান করা হবে, নর্তকী গায়িকাদের প্রতিষ্ঠিত করা হবে, বাদ্যযন্ত্রসমূহের কদর করা হবে এবং এই উম্মাতের শেষ যুগের লোকেরা তাদের পূর্ব যুগের লোকদের অভিসম্পাত করবে, তখন তোমরা একটি অগ্নিবায়ু অথবা ভূমিধ্বস অথবা চেহারা বিকৃতির আজাবের অপেক্ষা করবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২২১০)
হাদিস গবেষকদের অনেকের এই হাদিসটির সনদগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও হাদিসে বর্ণিত প্রতিটি অভ্যাসই নিন্দনীয় এবং দুনিয়া-আখিরাতের সফলতা ছিনিয়ে নেওয়ার কারণে। নিম্নে কোরআন-হাদিস থেকে প্রতিটি পয়েন্টের আলাদা রেফারেন্স বের করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
গনীমতের সম্পদ ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করা : ইসলামের নির্ধারিত আইনের বাইরে গিয়ে গনিমতের সম্পদ নিজের হস্তগত করা জঘন্য অপরাধ। হাদিসে আছে, যারা অন্যায় ভাবে গনীমতের সম্পদ নিজের করার চেষ্টা করবে, তা পরকালে আগুন হয়ে তাদের গ্রাস করবে। (নাসায়ি, হাদিস : ৩৮২৭)

আমানতের খিয়ানত করা : আমানত রক্ষা করা ফরজ। আমানত রক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, যার আমানতদারী নেই, তার ঈমান নেই। আর যে ওয়াদা রক্ষা করে না, তার দ্বীন নেই। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৯০)
জাকাতকে জরিমানা মনে করা : জাকাত ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। একে অস্বীকার করা বা জরিমানা মনে করা ঈমান পরিপন্থী কাজ।

স্ত্রীর আনুগত্য করা : স্ত্রীর আনুগত্যের মানে হলো, স্ত্রীর অন্যায় আবদার রক্ষা করতে গিয়ে মা-বাবার বিরুদ্ধাচরণ করা। স্ত্রীর ভালোবাসায় হালাল-হারাম ভুলে যাওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) শুধু ঘরোয়া বিষয়ই নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রেও নিজের স্ত্রীদের থেকে মতামত নিতেন। (বুখারি, হাদিস : ২৭৩১)

মায়ের অবাধ্য হওয়া : আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা মাতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন, মিথ্যা কসম করা। … (বুখারি, হাদিস : ৬৮৭০)
বাবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা : বর্তমান যুগে আমাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধু-বান্ধবের সম্পর্কই ভালো। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বাবার যৌক্তিক কথার ওপর বন্ধুর কথাকে গুরুত্ব দিই। বাবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করি, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। তবে বাবা যদি ঈমান বিধ্বংসী কোনো প্রস্তাব দেয়, তা ভদ্রভাবে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে, যেমন ইবরাহিম (আ.) করেছেন।
মসজিদে শোরগোল করা : মহানবী (সা.) বলেছেন, সাবধান, তোমরা মসজিদে বাজারের ন্যায় শোরগোল করবে না। (আব দাউদ, হাদিস : ৬৭৫)

অসত্ লোকের নেতৃত্ব : হাদিসে সবচাইতে খারাপ চরিত্রের লোক হবে তার সম্প্রদায়ের নেতা হওয়াকে কিয়ামতের আলামত হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০৩৬)
কোন লোককে তার অনিষ্টতার ভয়ে সম্মান করা : অত্যাচার জুলুম করে প্রভাবশালী হওয়াদের মহানবী (সা.) নিকৃষ্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৬০৩২)

মদ পান করা : ইসলামের দৃষ্টিতে মাদ হারাম। মদ পান করলে ৪০ দিন ইবাদত কবুল হয় না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩৭৭)

রেশমী বস্ত্র পরিধান করা : দুনিয়াতে পুরুষের জন্য রেশমী কাপড় পরিধান করা নিষিদ্ধ। (তিরমিজি, হাদিস : ১৭২০)
নাচ-গানের প্রতি ঝুঁকে পড় : পবিত্র কোরআনে এই কাজকে অবমাননাকর শাস্তির কারণ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। (সুরা লোকমান, আয়াত : ৬)

বাদ্যযন্ত্রের কদর করা : পবিত্র কোরআনে একে শয়তানের কর্ম বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৯০)
পূর্ববর্তী লোকদের গালিগালাজ করা : শেষ কিছু লোক পূর্ববর্তী অহেতুক গালি দিবে। বর্তমান যুগেও দেখা যায়, অনেকে পূর্ববর্তী নবী বা সাহাবিদের ওপরও বিভিন্ন অমূলক অভিযোগ তুলে বসেন, যা নিষেধ। (বুখারি, হাদিস : ১৩৯৩)

সর্বশেষ সংবাদ

ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪১২

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আরও ৪১২ জন এডিস মশাবাহিত...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ