রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। গ্রেপ্তারের পর দিনই তাকে কলম্বোর একটি সরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার কলম্বোর অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে ৭৬ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহেকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন শনিবার তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকদের বরাতে জানানো হয়, গ্রেপ্তারের পর তিনি তীব্র পানিশূন্যতা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের উপ-মহাপরিচালক রুকশান বেল্লানা।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারাগারের নিজস্ব চিকিৎসা কেন্দ্রে তার চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় তাকে শ্রীলঙ্কার প্রধান সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিক্রমাসিংহেকে দেখতে কারাগারে গিয়ে বিরোধীদলীয় একাধিক এমপি জানান, অসুস্থ হলেও তার মনোবল অটুট রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বর্তমান সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে, কারণ তিনি আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠছিলেন।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে একটি ব্যক্তিগত সফরের সময় রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। পুলিশ বলছে, সফরের খরচ হিসেবে তিনি প্রায় ১ কোটি ৬৬ লাখ রুপি (প্রায় ৫৫ হাজার ডলার) রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নিয়েছেন। যদিও বিক্রমাসিংহে দাবি করেছেন, স্ত্রীর সফরব্যয় তিনি নিজেই বহন করেছেন।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড ও তিনগুণ অর্থদণ্ড হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে অর্থনৈতিক সংকটের সময় দায়িত্ব নিয়ে বিক্রমাসিংহে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তা নিশ্চিত করেন এবং কর ও জ্বালানি সংস্কার করে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করেন। তবে ২০২৩ সালের নির্বাচনে বামপন্থি নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়েকের কাছে হেরে তিনি পদচ্যুত হন।
নতুন সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে একাধিক সাবেক মন্ত্রী ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে। এই প্রেক্ষাপটে বিক্রমাসিংহের গ্রেপ্তার শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান