ফ্যাশনের ধারা প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে, আর সেই পরিবর্তনের হাওয়া এখন চীনে নতুন এক প্রবণতা নিয়ে এসেছে—’ফেসকিনি’। একসময় যা কেবল ব্যাংক ডাকাতদের মুখোশের মতো দেখাত, তা এখন চীনের তরুণ-তরুণীদের কাছে ফ্যাশনের এক নতুন অনুষঙ্গ। মূলত সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি (UV) রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে ব্যবহৃত এই ফেসকিনির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
করোনা-১৯ মহামারীর সময় সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস থেকেই এর জনপ্রিয়তা বাড়ে। সিনথেটিক কাপড়ে তৈরি এসব ফেসকিনি একাধিকবার ধোয়া এবং ব্যবহার করা যায়। কিছু মাস্ক শুধু মুখ ঢাকে, আবার কিছু কপাল, গলা ও বুক পর্যন্ত ঢেকে রাখতে পারে। এর দামও বেশ সাশ্রয়ী, কয়েক ডলার থেকে শুরু করে ৫০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডাস্যু কনসাল্টিংয়ের তথ্য অনুযায়ী, চীনে ‘ইউভি’ পোশাকের বাজার এখন প্রায় ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। গত এক বছরে শুধু ফেসকিনির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, আর ইউভি স্লিভসের বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ, যা পুরুষদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।
একসময় কেবল বয়স্ক নারীরা সাঁতারের সময় ত্বক বাঁচাতে এটি ব্যবহার করলেও, এখন তরুণ প্রজন্মও **ত্বকের যত্নের** অংশ হিসেবে ফেসকিনি ব্যবহার করছে। বিশেষ করে নারীরা সুন্দর ও ফরসা ত্বক ধরে রাখতে এটিকে তাদের নিয়মিত পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন।
এই নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ডের কারণে চীনা কোম্পানিগুলো ব্যাপক লাভবান হচ্ছে। শেনজেনের প্রতিষ্ঠান বেনেআন্ডার (Beneunder) ফেসকিনি ও অন্যান্য ইউভি প্রতিরোধী পোশাকের একটি সম্পূর্ণ লাইন তৈরি করেছে। আন্টা ও লি-নিংয়ের মতো বড় স্পোর্টসওয়্যার কোম্পানিগুলোও এই বাজারে প্রবেশ করেছে। তবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এই ফ্যাশন নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্ট এবং সরকারি সংবাদমাধ্যমে এই প্রবণতার সমালোচনাও করা হয়েছে।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট