spot_img

দুই শর্তে গাজা যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় রাজি নেতানিয়াহু

অবশ্যই পরুন

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সব বন্দিদের মুক্তি এবং হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের শর্তে গাজায় যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনায় রাজি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটাই ইসরায়েলের জন্য গ্রহণযোগ্য।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে কথা বলার সময় নেতানিয়াহু জানান, তাঁর মন্ত্রিসভা গাজা শহরের (উত্তরাঞ্চল) বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলার পরিকল্পনাও অনুমোদন করেছে, যদিও আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণভাবে এর বিরোধিতা চলছে।

হামাস সোমবার কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় একটি প্রস্তাবে সম্মত হয়, যাতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে এবং কাতারের মতে, এতে গাজায় আটক থাকা অর্ধেক বন্দি মুক্তি পাবে।

তবে প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি বর্তমানে আলোচনায় থাকা ওই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, আলোচনার জন্য নতুন করে প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে, যখন আলোচনা কোথায় হবে, তা নির্ধারিত হবে।

বৃহস্পতিবার রাতে গাজা ডিভিশনের সদর দপ্তরে একটি ভিডিও বক্তব্যে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি নির্দেশ দিয়েছি, যেন আমাদের সব বন্দির মুক্তির জন্য অবিলম্বে আলোচনা শুরু করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এসেছি আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) গাজা শহর দখলের এবং হামাসকে পরাজিত করার পরিকল্পনা অনুমোদন দিতে। হামাসকে পরাজিত করা এবং আমাদের সব বন্দিকে মুক্ত করা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।

তবে পরবর্তী আলোচনার ধাপে কী হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে বারবার বলেছেন, কেবল আংশিক বন্দিমুক্তির বিনিময়ে কোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তারা রাজি নন।

বুধবার হামাস এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মধ্যস্থতাকারীদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষা করার এবং চুক্তি বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ তোলে।

গত শনিবার নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল কেবল এমন কোনো চুক্তিতেই রাজি হবে যেখানে সব বন্দি একসঙ্গে মুক্তি পাবে এবং যুদ্ধ শেষ করার শর্ত হিসেবে হামাসকে নিরস্ত্র করা, গাজার সামরিকীকরণ শেষ করা, গাজার সীমান্তে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ এবং এমন এক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যা হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয়—এসব অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ইসরায়েলের ধারণা, ২২ মাসের যুদ্ধের পর ৫০ জন বন্দির মধ্যে মাত্র ২০ জন এখনো জীবিত।

বৃহস্পতিবার গাজা শহরের পূর্বাংশে ব্যাপক বোমা হামলার কথা জানিয়েছেন ফিলিস্তিনিরা, এর এক দিন আগেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেখানে অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয়।

আইডিএফ জানিয়েছে, গাজা শহরের প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণে আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বলার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে চিকিৎসা সংস্থাগুলোকে, কারণ সেনা অভিযান শুরুর আগে শহর খালি করা হবে।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বাকি অংশটুকু ধ্বংস করতে পারে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, যারা যেতে পারবে না বা যেতে চায় না, তাদের সহায়তায় তারা থাকবেন।

নেতানিয়াহু গত মাসে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তির বিষয়ে হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা ভেঙে পড়ার পর গাজা উপত্যকার পুরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলে এক হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং আরও ২৫১ জনকে জিম্মি করে নেওয়া হয়—তারই প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সেই থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২,১৯২ জন গাজাবাসী নিহত হয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই পরিসংখ্যানকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে।

সূত্র: বিবিসি

সর্বশেষ সংবাদ

লৌহ-দৃঢ় সম্পর্ক উল্লেখ করে নতুন বার্তা চীন-পাকিস্তানের

চীন ও পাকিস্তান বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক যৌথ বার্তায় জানিয়েছে, বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন এবং নতুন অক্ষ বা জোট গঠনের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ