ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদে জানিয়েছেন, দেশটি আগের তুলনায় আরও আধুনিক ও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ইসরায়েল যদি আবারও উসকানিমূলক কোনো অভিযান চালায়, তবে এসব নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) তেহরানে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাসিরজাদে বলেন, ‘১২ দিনের যুদ্ধে আমরা যে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছি, সেগুলো বহু বছর আগে তৈরি হয়েছিল। আজ আমাদের হাতে রয়েছে অনেক বেশি সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র, আর ইহুদীবাদী শত্রু আবার কোনো আগ্রাসনে নামলে আমরা অবশ্যই তা ব্যবহার করব।’
তিনি জানান, ওই যুদ্ধে ইরান কেবল ইসরায়েলের মুখোমুখি হয়নি, বরং এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের লজিস্টিক, গোয়েন্দা ও পূর্ণ সমর্থনও ছিল। তবুও ইরানের সেনারা পুরোপুরি দেশীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেই লড়াই করেছে।
তার ভাষায়, ‘বিশ্ব দেখেছে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে এবং শত্রুপক্ষের ওপর ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে এনেছে।’
নাসিরজাদে দাবি করেন, ইসরায়েল তাদের সেন্সরশিপে হামলার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি গোপন করার চেষ্টা করলেও ধীরে ধীরে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যা ইরানের সামরিক সক্ষমতাই প্রমাণ করে।
তিনি আরও জানান, যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েল তাদের সবচেয়ে উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—থাড, প্যাট্রিয়ট, আয়রন ডোম ও অ্যারো—সবই ব্যবহার করেছিল। তবুও প্রথম দিকে ইরানের প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হলেও যুদ্ধের শেষ দিকে ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছিল।
ইসরায়েলি সেনাপ্রধান এর আগেই জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে আবারও ইরানে হামলা চালাতে তারা প্রস্তুত। গত ১৩ জুন ইসরায়েল হঠাৎ সামরিক অভিযান শুরু করে, যেখানে ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনা টার্গেট করা হয়। এ সময় সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা ও অন্তত ১১ জন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন।
ইরানের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১২ দিনের সংঘাতে মোট ১ হাজার ৬২ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৭৮৬ জন সেনা ও ২৭৬ জন বেসামরিক নাগরিক।
প্রতিশোধে ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক ও একজন সেনা নিহত হন। অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে যুদ্ধ চলাকালে প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছিল।
সূত্র: আইআরএনএ, ইরান ইন্টারন্যাশনাল