সালাম ইসলামের প্রাথমিক শিক্ষাগুলোর একটি। এটি উত্তম কাজগুলোর অন্তর্ভুক্ত। খোদ নবীজিও (সা.) উম্মতদের শিষ্টাচারের এই বৈশিষ্ট্য প্রতিপালনের নির্দেশনা দিয়েছেন।
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলো- ইসলামের কোন কাজটি উত্তম? জবাবে রাসুল (সা.) বলেন- তুমি খাবার খাওয়াবে ও পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১১)
অন্যদিকে পবিত্র কুরআনে খোদ মহান রব ঘোষণা দিয়েছেন, ‘হে নবী আপনি তাদের বলে দিন- যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সুরা আল-ইমরান, আয়াত: ৩১)।
তবে সালামের ক্ষেত্রে প্রায়সময়ই একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায়, সেটি হলো- অনিচ্ছাকৃত কারও শরীরে পা লাগলে ওই ব্যক্তিকে হাত দিয়ে ছুঁয়ে সালাম করা হয়। কেউ কেউ হাত দিয়ে ছুঁয়ে সালামের পর নিজের হাতে চুমুও খেয়ে থাকেন। এমনটা করা কি শরিয়তসম্মত?
ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, পৃথিবীর একেক দেশে সম্মান প্রদর্শনের জন্য একেক রীতি প্রচলিত রয়েছে। যেমন আরবের দেশগুলোয় কাউকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে অনেক সময় পা দিয়েও ডাকা হয়। ওইসব দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী এমনটা করা দোষের কিছু নয়।
তবে বাংলাদেশে কারও শরীরে পা লাগলে সেটিকে অপমান হিসেবে ধরা হয়। এজন্য দেশীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী কারও শরীরে পা লাগলে দুঃখপ্রকাশ করা যেতে পারে। এতেই ওই ব্যক্তি বুঝে যাবেন যে, ইচ্ছাকৃত তাকে অপমান করার জন্য পা লাগানো হয়নি। তবে হাত দিয়ে ছুঁয়ে সালাম করা বা হাতে চুমু খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই, হাদিসেও এমন কোনো নির্দেশনা নেই।
এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, কাউকে পায়ে ধরে সালাম করাও ইসলামে জায়েজ নেই। আনাস ইবন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার জনৈক এক ব্যক্তি বললো- ইয়া রাসুলাল্লাহ্, আমাদের কারও যদি তার ভাই বা তার বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তবে কি সে তার অভিবাদনের জন্য মাথা ঝুঁকাবে? জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, না। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলো, তাহলে কি তাকে লেপটে (জড়িয়ে) ধরবে এবং চুমু দেবে? জবাবে নবীজি (সা.) বললেন, না। লোকটি আবারও বললো- তাহলে কি তাকে লেপটে ধরবে এবং তার সঙ্গে মুসাফাহা করবে? জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ২৭২৮)