জাপানের সামরিক অতীত অস্বীকার করে আগ্রাসনকে ‘সাদা করার’ চেষ্টা করছে কিছু শক্তি—এমন অভিযোগ তুলে টোকিওকে যুদ্ধকালীন ইতিহাসের মুখোমুখি হতে আহ্বান জানিয়েছে চীন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পরও জাপানের কিছু মহল আগ্রাসন অস্বীকারের চেষ্টা করছে, ইতিহাস বিকৃত করছে এবং এমনকি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে।
ওয়াংয়ের এই মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য ‘অনুশোচনা’ প্রকাশ করে যুদ্ধের পথে আর না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
তবে যুদ্ধ-সংশ্লিষ্ট বিতর্কিত ইয়াসুকুনি মন্দিরে তিনি পুষ্পার্পণ পাঠান, আর কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি ব্যক্তিগতভাবে সেখানে যান। এই মন্দির দীর্ঘদিন ধরে জাপান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনার কারণ।
ওয়াং স্মরণ করিয়ে দেন, ‘৮০ বছর আগে আজকের দিনে জাপান পরাজিত হয়ে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছিল। জাপানি সামরিকদের আগ্রাসনের ফলে চীনসহ এশিয়ার বহু দেশের মানুষ অকল্পনীয় ভোগান্তির শিকার হয়েছিল, জাপানের জনগণও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।’
তিনি বলেন, কায়রো ঘোষণা ও পটসডাম ঘোষণাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক নথিতে জাপানের যুদ্ধ-দায় স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং চীন থেকে দখল করা তাইওয়ানসহ সব এলাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
ওয়াংয়ের ভাষায়, ‘এটি বিশ্ববিরোধী ফ্যাসিবাদী যুদ্ধে অনস্বীকার্য বিজয় এবং যুদ্ধ-পরবর্তী আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
কিন্তু জাপানের কিছু মহল এই ইতিহাস বিকৃত করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ‘এই আচরণ নিন্দনীয় ও আত্মঅপমানজনক, যা জাতিসংঘ সনদ, যুদ্ধ-পরবর্তী আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা, মানবিক বিবেক ও বিজয়ী দেশগুলোর জনগণের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে,’ বলেন ওয়াং।
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাসের মুখোমুখি হয়েই কেবল সম্মান পাওয়া যায়; ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিলেই ভবিষ্যতের পথে এগোনো যায়; আর অতীত মনে রাখলেই ভুল পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব। আমরা জাপানকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি