এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর তুলনায় একাদশ শ্রেণিতে আসনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায়, সারাদেশে প্রায় ২০ লাখ আসন ফাঁকা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলো যেমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তেমনি শিক্ষাবিদরা ভর্তি ব্যবস্থায় সংস্কারের তাগিদ দিচ্ছেন।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৬ জন শিক্ষার্থী। তবে পাস করেছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন, অর্থাৎ ফেল করেছে ৬ লাখেরও বেশি। অথচ দেশের ৯ হাজারেরও বেশি কলেজ ও মাদ্রাসায় আসন রয়েছে প্রায় ২২ লাখ, কারিগরি বোর্ডে ৯ লাখ এবং সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকগুলোতে আরও ২ লাখ—সব মিলিয়ে একাদশ শ্রেণিতে মোট আসন প্রায় ৩৩ লাখ।
এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে, পাসকৃত সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও প্রায় ২০ লাখ আসন খালি থাকবে, যা বড় একটি উদ্বেগের বিষয়। এর ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী না পাওয়ার ঝুঁকিতে পড়ছে। গত বছরই দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান কোনো শিক্ষার্থী পায়নি, আর এবার সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, “এত বিপুলসংখ্যক আসন খালি থাকা আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়। অনেক প্রতিষ্ঠান এবারও শিক্ষার্থী পাবে না।” তিনি জানান, বোর্ড এ নিয়ে সমাধানের পথ খুঁজছে।
শিক্ষা গবেষক ড. আবদুস সালাম মনে করেন, উদ্বেগ প্রকাশ করলেই হবে না, বরং সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁর মতে, মানহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া ও শিক্ষার্থীদের অপ্রতিসম বণ্টনই এই সংকটের মূল কারণ। তিনি ভর্তি প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত পরিবর্তনের পরামর্শ দেন।
এমন বাস্তবতায় বর্তমানে চলমান অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমে শিক্ষার্থী-আসনের এই ব্যাপক ব্যবধান দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকট মোকাবেলায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।