মুসলিম ইতিহাসের বিরল প্রতিভা ও শ্রেষ্ঠ দার্শনিক ছিলেন ইমাম গাজালি (রহ.)। ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার ধারা পাল্টে দেন। তিনি অমুসিলম দার্শনিকদের আক্রমণের উত্তরে আত্মরক্ষার পরিবর্তে তাদের ওপর বুদ্ধিবৃত্তিক আক্রমণের ধারা সূচনা করেন।
ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানে তাঁর পাণ্ডিত্যপূর্ণ অবস্থানের কারণে তাঁকে হুজ্জাতুল ইসলাম তথা ইসলামের প্রমাণতুল্য ব্যক্তিত্ব উপাধি দেওয়া হয়। জ্ঞান সাধনার এক পর্যায়ে ইমাম গাজালি (রহ.) বাগদাদের নিজামিয়া মাদরাসার অধ্যাপনা ছেড়ে দেশ ভ্রমণে বের হন। এ সময় তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করেন। ভ্রমণের এক পর্যায়ে তিনি ফিলিসি্তনে আগমন করেন।
দাবি করা হয়, ছোট-বড় মিলিয়ে ইমাম গাজালি (রহ.)-এর বইয়ের সংখ্যা ৪৫৭টি। এর মধ্যে ইহয়াউ উলুমুদ্দিন শ্রেষ্ঠত্বের দাব। এটি বিশ্বের বহুল পঠিত বইগুলোর অন্যতম। ইমাম গাজালি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত ইহয়াউল উলুমুদ্দিন গ্রন্থটি আল আকসা প্রাঙ্গণে বসে। তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে স্বল্প সময় অবস্থান করলেও নবী-রাসুলদের স্মৃতিধন্য ফিলিসি্তন ভূমির প্রতি তাঁ অন্তরের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ছিল অত্যন্ত গভীর। তাঁর এই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাঁর রচিত ‘আর রিসালাতুল মাকদিসিয়্যা’। এই বইয়ে তিনি জেরুজালেমের স্মৃতি, বৈশষ্ট্যি ও মর্যাদা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি তঁার আধ্যাত্মিক সাধনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘খিলওয়াহ’ (একানে্ত আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হওয়া) সম্পন্ন করেন।
আল আকসা কম্পে্লক্সের যে ঘরে ইমাম গাজালি (রহ.) অবস্থান করতেন তা পূর্ব দেয়াল সংলঘ্ন। এটাকে বর্তমানে বাবুর রহমত বলা হয়। যা গোল্ডেন গেটের বিপরীতে অবস্থিত। এটি বেশ কয়েক বছর বন্ধ ছিল। কয়েক বছর আগে তা উন্মুক্ত করে দেওয়া। ছোট এই অবকাঠামোর সম্মুখভাগের দুই প্রানে্ত দুটি খিলান এবং তার মাঝে দুটি প্রবেশ দ্বার। দুই পাশে ছোট দুটি জানালা। ওপরে দুটি পাথরের গম্বুজ। ইমাম গাজালি (রহ.) গম্বুজের নিচে আল্লাহপ্রেমের সাধনা ও লেখালেখি করতেন। ইবাদত ও জ্ঞান সাধনার জন্য একটি আদর্শ স্থান এটি।
কথিত আছে, ইমাম গাজালি (রহ.) যখন আল আকসায় অবস্থান করছিলেন, তখন চারদিকে ক্রুসেড যুদ্ধের দামামা বাজছিল। তিনি নিজেও যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
তথ্য ও ছবি : ইসলামিক ল্যান্ডমার্ক