টেস্ট অভিষেকেই বাজিমাত করলেন নিউজিল্যান্ডের তরুণ পেসার জ্যাকারি ফোকস। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া এই ডানহাতি পেসার দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছেন ফাইফারের দেখা। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে সাদা পোশাকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে কিউইরা। জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ৩৫৯ রানে হারিয়ে দলটি তুলে নিয়েছে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের সর্ববৃহৎ জয়। সব মিলিয়ে টেস্ট ইতিহাসে এটি তৃতীয় বড় জয়।
বুলাওয়েতে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৫ রানে গুঁটিয়ে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। জবাবে তিন ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় দিনের শেষে ৩ উইকেটে ৬০১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি সর্বোচ্চ দলীয় রান কিউইদের। ৪৭৬ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ে ১১৭ রানে অলআউট হয়েছে মাত্র ২৮.১ ওভারে, তাও আবার একটানা প্রথম সেশনের মধ্যেই।
দুই ম্যাচের এই টেস্ট সিরিজে মোট চার ইনিংসেই ১৭০ রানের নিচে অলআউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে। পরপর ছয়টি টেস্ট হারের রেকর্ডও হয়ে গেছে তাদের। আর নিউজিল্যান্ড দারুণভাবে শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে সফর। টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজে সব ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হবার পর টেস্টেও জিতেছে দুই ম্যাচেই।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে ওপেনার ডেভন কনওয়ে ১৫৩ রানে আউট হলেও ইনিংস ঘোষণার আগে হেনরি নিকোলস ১৫০ ও রাচিন রবীন্দ্র ১৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন। টেস্টে এই নিয়ে তৃতীয়বার কোন দলের তিন ব্যাটার একই ইনিংসে দেড়শ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলার কীর্তি গড়ল। এর আগে ১৯৩৮ সালে ইংল্যান্ড এবং ১৯৮৬ সালে ভারতের তিন ব্যাটার এক ইনিংসে এই নজির গড়েছিল।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে নিউজিল্যান্ড পেসার ম্যাট হেনরির তোপের মুখে পড়ে ১১ রানে দুই ওপেনারকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ব্রায়ান বেনেট শূন্য ও ব্র্যান্ডন টেইলর ৭ রানে আউট হন। চার বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা টেইলর প্রথম ইনিংসে ৪৪ রান করেছিলেন। এরপর শন উইলিয়ামস ৯ ও অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ১৭ রানে থামলে জিম্বাবুয়ের ইনিংসে ধস নামান ফোকস।
৫৪ থেকে ৯৮ রানের মধ্যে জিম্বাবুয়ের ৫ উইকেট শিকার করেন ফোকস। এসময় জিম্বাবুয়ের পাঁচ ব্যাটারের কেউই দুই অংকে পা রাখতে পারেননি। ৯৮ রানে নবম উইকেট পতনের পরও তিন নম্বরে নামা নিক ওয়েলচের দৃঢ়তায় ১শ রানের নীচে গুটিয়ে যাবার লজ্জা থেকে রক্ষা পায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নেওয়া ফৌকস দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন।
ম্যাচে ২৫ ওভারে ৭৫ রানে ৯ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট অভিষেকে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড গড়েন ফৌকস। এর আগের রেকর্ডটি ছিল আরেক পেসার উইল ও’রুর্কের। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিল্টনে দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে ৩২.১ ওভারে ৯৩ রানে ৯ উইকেট শিকার করেছিলেন ও’রুর্ক।
প্রথম ইনিংসে ১৫৩ রানের সুবাদে ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় হন কনওয়ে। সিরিজে ১৭ উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন হেনরি। প্রথম টেস্ট ৯ উইকেটে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই ম্যাচের সিরিজে এই নিয়ে পঞ্চমবার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল ব্ল্যাক-ক্যাপসরা।